শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রথমবার শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অভিনেত্রী অফিসে প্রবেশের পরই সহকর্মীদের তোপের মুখে পড়ায় বাধ্য হয়ে শিল্পকলার ডিজি ও সচিবের পরামর্শে শিল্পকলা থেকে বের হয়ে আসেন জ্যোতি।
শিল্পকলা থেকে বের হয়ে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক থেকে লাইভে এসে এ নিয়ে কথা বলেন জ্যোতি। লাইভে কথা বলার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। একসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় নিজের চাকরি পাওয়া নিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হয়ে এই পদে আসিনি। নিজ যোগ্যতায় এই চাকরি পেয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে জ্যোতি বলেন, ‘আমি যখন থেকে বোঝা শিখেছি, তখন থেকে একটা সরকারকে দেখেছি। সেটা আওয়ামী লীগ সরকার। সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে যে একটা রাষ্ট্রীয় শিল্পকলার পদ বদলে যায় আমার চোখে এটাই প্রথম। আমি কোনো দলের সুবিধা নিয়ে এই পদে আসিনি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিয়ে এই পদে আসিনি। অনেকেই এটা মনে করেন, কিন্তু এই ধারণাটা মিথ্যা। কীভাবে আমার চাকরিটা হয়েছে সেটা আমিই জানি।’
এসময় শিল্পকলায় চলমান অরাজকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শিল্পকলা একাডেমি থেকে বের হয়ে আসা প্রসঙ্গে লাইভে জ্যোতি বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে ২ বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে কাজ করছিলাম। এখন পর্যন্ত আমার চাকরিটা আছে। চুক্তি বাতিল হয়নি। গত দুই মাসে দেশের চলমান অবস্থার মধ্যেই শিল্পকলায় নতুন ডিজি এসেছে। তাই মনে হয়েছে অফিসে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু একাডেমিতে প্রবেশের পর পরিস্থিতি খারাপ লক্ষ্য করেছি। অনেক মানুষ সেখানে চিৎকার করছিলেন। পরে ডিজির সঙ্গে দেখা করি। স্যার বললেন, দেখেন এই অবস্থা। এর মধ্যে অফিসে কেন এসেছেন? আপনারা বরং চলে যান, পরিস্থিতি সামলাতে দেন। পরে এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয় সে মোতাবেক কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘ডিজি স্যারের সঙ্গে কথা বলে লবিতে ফিরে উপস্থিত অন্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু উনারা কোনো কথা বলবেন না। শুনতে পেলাম, আরো লোকজন খবর দেওয়া হয়েছে। আমাদের আটকে রাখবে বা কিছু করবে। আমার খুব অবিশ্বাস্য লাগছিল, সবার মুখ অপরিচিত লাগছিল। কারণ এরাই আমার সহকর্মী ছিলেন!’
‘সাংবাদিক বন্ধুসহ যারা আমার খোঁজ নিয়েছেন তাদের বলি, আমি ঠিক আছি। তবে মানসিকভাবে আমি একদমই ঠিক নেই। জানিনা কতদিন লাগবে এসব কাটিয়ে উঠতে।’ বলছিলেন জ্যোতি।
লাইভের শেষ পর্যায়ে প্রশ্ন রেখে জ্যোতি বলেন, ‘আমার এক পরিচয় আমি অভিনেত্রী, আরেক পরিচয় শিল্পকলার পরিচালক। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যেও এখন দুটো ভাগ হয়ে গেছে। কোনো কাজ হচ্ছে না। আমার এই চাকরিটাও থাকছে না। আমি তাহলে কোথায় যাবো? আমি কী করবো? এই দেশ কি তাহলে আমার না?’
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ