মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

সংগীতে ৬০ পেরিয়ে রুনা লায়লা

প্রকাশনার সময়: ২৪ জুন ২০২৪, ২০:৪৮

উপমহাদেশের কিংবদন্তি গায়িকা রুনা লায়লা। দেশে-বিদেশে অগণিত ভক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তার। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ এই সময়ে জনপ্রিয়তার যেন কমতি নেই। দিন দিন বেড়েই চলেছে তার জনপ্রিয়তা।

সোমবার (২৪ জুন) গান রেকর্ডিংয়ের হিসেবে সংগীতজীবনের ৬০ বছর পূর্ণ হলো এই গায়িকার।

সংগীতজীবনের এমন অর্জনে রুনা লায়লাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা। ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন গায়িকার ভাই, মেয়ে ও স্বজনরা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মোট ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি।

৬০ বছর পূর্ণ উপলক্ষে রুনা লায়লা বলেন, ‘আপনাদের দোয়া, আশীর্বাদ ও ভালোবাসা আজ আমাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। এই ভালোবাসা, আশীর্বাদ ও শ্রদ্ধা যেন চিরকাল থাকে আমার সাথে।’

রুনা লায়লার স্বামী বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেতা আলমগীর বলেন, রুনা কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। এ রকম সিরিয়াস না হলে, এ রকম প্র্যাকটিস না করলে ৬০ বছর টিকে থাকা কোনোদিনও সম্ভব নয়।

রুনার লায়লার মেয়ে ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর বলেন, আমরা অনেক গর্বিত যে আমাদের একজন রুনা লায়লা আছেন।

ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে সনু নিগাম বলেন- আপনি এত ভালো কলাকার, আপনি এত সুন্দর, আপনার ব্যবহার এত ভালো। আপনার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। যখন থেকে আমার চোখ খুলেছে, তখন থেকে আপনাকে শুনছি। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। পৃথিবী আপনাকে ভালোবাসে, আমি আপনাকে ভালোবাসি।

পাকিস্তানের অভিনেতা ইমরান আব্বাস শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনি বাকি জীবন গাইতে থাকুন, পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করুন। পাকিস্তান থেকে ভালোবাসা জানাই।’

মাত্র বারো বছর বয়সে ‘জুগনু’ সিনেমার ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কী পেয়ারি’ গানটি গাওয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৬৪ সালের ২৪ জুন সিনেমার গানে পেশাগতভাবে পা রাখেন রুনা লায়লা। তিসনা মেরুতির কথায় গানটি কম্পোজ করেছিলেন মানজুর। সেই হিসেবেই আজ পেশাগতভাবে তার সংগীত জীবনে ষাট বছর পূর্ণ করলেন তিনি।

পাকিস্তানের বহু সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেছেন রুনা লায়লা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- হাম দোনো, রিশতা হ্যায় পেয়ার কা, কমান্ডার, আন্দালিব, নসীব আপনা আপনা, দিল অউর দুনিয়া, উমরাও জান আদা, আনমোল, নাদান, দিলরুবাসহ আরও বেশকিছু সিনেমায় গান গেয়েছেন তিনি।

১৯৭০ সালের ২৯ মে মুক্তিপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম পরিচালিত সিনেমা ‘স্বরলিপি’-তে প্রথম বাংলাদেশের সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেন রুনা লায়লা। এ সিনেমার ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। প্রথম প্লে-ব্যাকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেন। বাংলাদেশের সিনেমার গানেও তার কণ্ঠের কদর বেড়ে যায়।

১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এসে রুনা লায়লা একে একে- জীবন সাথী, টাকার খেলা, কাজল রেখা, রং বেরং, যাদুর বাঁশি, সুন্দরী, দেবদাস, চাঁদনী, দোলনা, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অন্ধপ্রেম, দোলা, অন্তরে অন্তরে, বিক্ষোভ, প্রিয়া তুমি সুখী হও, পাঙ্কু জামাই, দুই দুয়ারীসহ আরও বহু সিনেমায় গান গেয়ে শ্রোতা দর্শককে মুগ্ধ করেছেন তিনি।

বাংলা ভাষায় বহু আধুনিক জনপ্রিয় গানও রয়েছে রুনা লায়লা। এরমধ্যে উল্লেখ্য হচ্ছে— যখন থামবে কোলাহল, পাখি খাঁচা ভেঙ্গে উড়ে গেলে, বন্ধু তিনদিন তোর, পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম, প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যের আগে, ভাষার জন্য যারা দিয়ে গেছো প্রালসহ ইত্যাদি।

দি রেইন, জাদুর বাঁশি, অ্যাক্সিডেন্ট, অন্তরে অন্তরে, দেবদাস, প্রিয়া তুমি সুখী হও, তুমি আসবে বলে- সিনেমায় গানের জন্য সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান রুনা লায়লা।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ