আলোচনা-সমালোচনার সীমানা পেরিয়ে এবারের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে ১১টি সিনেমা। যেটাকে ইন্ডাস্ট্রির জন্য আদতে অশুভ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবু কারও কারও প্রত্যাশা ছিল- ছবিগুলোর মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ফের দর্শকের জোয়ার ফিরবে। সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হচ্ছে, কেমন যাচ্ছে ঈদের ছবিগুলো? আর দর্শকরাই বা কী বলছেন? সেসব খবর জানা যাক-
সিনেমা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, ঈদের ছবি হিসেবে বাণিজ্য ও দর্শকপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছে হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘রাজকুমার’। ছবিটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শাকিব খান। ছবির গল্পের বিভিন্ন অংশ দর্শককে আবেগাপ্লুত করছে। সেই সঙ্গে শাকিবের অভিনয়ও পাচ্ছে ভূয়সী প্রশংসা। ফলে স্টার সিনেপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে উল্লেখযোগ্য দর্শক সমাগম হচ্ছে।
ঈদে সর্বাধিক ১২৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘রাজকুমার’। এরপর হলসংখ্যায় দ্বিতীয় জায়গাটি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ নির্মিত ‘ওমর’র দখলে। ২১টি হল পেয়েছে ছবিটি। জানা গেছে, প্রেক্ষাগৃহের মতো দর্শক সাড়ায়ও ‘রাজকুমার’র পরেই অবস্থান করছে এটি। বিশেষ করে ছবিটির গল্প দর্শক-সমালোচকদের মুগ্ধ করছে। নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী তো ‘ওমর’ দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি, হাউমাউ করে কেঁদেছেন নির্মাতাকে জড়িয়ে ধরে।
মিশুক মনি নির্মিত ‘দেয়ালের দেশ’ নিয়ে প্রত্যাশা ছিল অনেকের। স্টার সিনেপ্লেক্স ছবিটির জন্য সর্বোচ্চ শো বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু মুক্তির পর সেই প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমীকরণ মিলছে না সেভাবে। তাই ছবিটির শো কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। ‘লিপস্টিক’ ছবি দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তরুণ নায়ক আদর আজাদ ও নায়িকা পূজা চেরী। কামরুজ্জামান রোমান পরিচালিত ছবিটিকে ‘পয়সা উসুল’ বলে মনে করছেন অনেক দর্শক। যদিও নানা জটিলতায় এটি সাতটির বেশি হল জোগাতে পারেনি। ঈদ ছবিগুলোর বাণিজ্য, দর্শক সমাগমের বিষয়ে জানতে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘এখনো ঈদের আমেজ আছে।
মানুষ ছুটিতে, বেড়ানোর মধ্যে আছে। সেই হিসেবে ছবিগুলো ভালোই যাচ্ছে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে “রাজকুমার” ছবিটি বেশ ভালো চলছে। কারণ শাকিব খানের দর্শক-ভক্ত প্রচুর। এরপর “ওমর” ছবিটি দারুণ যাচ্ছে। আমরা এই ঈদে মোট আটটি ছবি চালাচ্ছি। এর মধ্যে শরিফুল রাজ অভিনীত “ওমর” থেকে অসাধারণ সাড়া পাচ্ছি। বাকিগুলো মন্দের ভালো চলছে বলা যায়।’ গত বছরের কোরবানির ঈদে ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে দেশের সিনেমায় যে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল, এবার সেটা সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন এই সিনে বাণিজ্যের মানুষ। তার মতে, ছবির ভালো ব্যবসার জন্য ‘ওয়ার্ড অব মাউথ’ বা দর্শকের মুখ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসা জরুরি।
দীর্ঘ সময়ের গবেষণা ও প্রস্তুতি নিয়ে সরকারি অনুদানে ‘কাজলরেখা’ নির্মাণ করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। এটি ১০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। তবে ছবিটি ঘিরে দর্শকের তেমন কোনো উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে না।
প্রচারের ঢাকে কিছুটা সরব অবস্থানে ‘মোনা: জ্বীন ২’। তবে মাত্র ছয় প্রেক্ষাগৃহে চলছে ছবিটি। এর মধ্যেও বিভিন্ন হলে ফাঁকা পড়ে আছে এর শো। কেবল স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় এর দর্শক সমাগম রয়েছে।
এর বাইরে জায়েদ খান অভিনীত ‘সোনার চর’, ফুয়াদ চৌধুরী পরিচালিত ‘মেঘনা কন্যা’, জসিম উদ্দিন জাকির পরিচালিত ‘মায়া: দ্য লাভ’, কাজী হায়াতের ‘গ্রিন কার্ড’ ও ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘আহারে জীবন’ ছবিগুলো দর্শকের নাগাল ছুঁতে পারছে না।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ