দেখতে দেখতে ২৫ বছর হয়ে গেল নব্বই দশকের সবচেয়ে সুন্দর ও মেধাবী নায়ক সালমান শাহ নেই। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্র অঙ্গনে বড় শূন্যতা তৈরি করে বিদায় নেন এ নায়ক। তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত্যুর প্রায় দুই দশক পর পিবিআই নিশ্চিত করে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেন। তবে মৃত্যুর এত বছর পরেও সালমান শাহর তারকাখ্যাতি সমুজ্জ্বল। তার পরবর্তীকালে যারা চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার জন্য এসেছেন প্রায় প্রত্যেকেই বলেছেন, তাদের অনুপ্রেরণার প্রধান উৎস সালমান।
এদিকে, সালমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি ভক্তরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নানা আয়োজনে। কেউ লিখছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কেউ আবার মিলাদ মাহফিলেরও আয়োজন করছেন। এভাবেই যুগ থেকে যুগে সবার কাছে চিরসবুজ অমর নায়ক হয়ে বেঁচে থাকবেন সালমান শাহ।
কী ঘটেছিল সেদিন?
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ২০১৭ সালে বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সালমান শাহ'র মা নীলা চৌধুরী বলেন, বাসার নিচে দারোয়ান সালমান শাহ’র বাবাকে তার ছেলের বাসায় যেতে দিচ্ছিল না ।
নীলা চৌধুরীর বর্ণনা ছিল এ রকম, বলেছে স্যার এখনতো উপরে যেতে পারবেন না। কিছু প্রবলেম আছে। আগে ম্যাডামকে (সালমান শাহ’র স্ত্রীকে) জিজ্ঞেস করতে হবে। এক পর্যায়ে উনি জোর করে উপরে গেছেন। কলিং বেল দেবার পর দরজা খুললো সালমানের স্ত্রী সামিরা।
সামিরাকে বললেন ইমনের সাথে কাজ আছে, ইনকাম ট্যাক্সের সই করাতে হবে। ওকে ডাকো। তখন সামিরা বললো, আব্বা ওতো ঘুমে। তখন উনি বললেন, ঠিক আছে আমি বেডরুমে গিয়ে সই করিয়ে আনি। কিন্তু যেতে দেয় নাই। আমার হাজব্যান্ড প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বসে ছিল ওখানে।
বেলা এগারোটার দিকে একটি ফোন আসে নীলা চৌধুরীর বাসায়। ফোনে বলা হয়, সালমান শাহকে দেখতে হলে তখনই যেতে হবে। ফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে বাসার দিকে রওনা হন। তবে ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে সালমান শাহকে বিছানার ওপর দেখতে পান নীলা চৌধুরী।
খাটের মধ্যে যেদিকে মাথা দেবার কথা সেদিকে পা। আর যেদিকে পা দেবার কথা সেদিকে মাথা। পাশেই সামিরার এক আত্মীয়ের একটি পার্লার ছিল। সে পার্লারের কিছু মেয়ে হাতে-পায়ে সর্ষের তেল দিচ্ছে। আমি তো ভাবছি ফিট হয়ে গেছে।
আমি দেখলাম আমার ছেলের হাতে পায়ের নখগুলো নীল। তখন আমি আমার স্বামীকে বলেছি, আমার ছেলে তো মরে যাচ্ছে। ইস্কাটনের বাসা থেকে সালমান শাহকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে বলা হয় সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছে। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার দাবি করা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ