পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ঐতিহ্যবাহী নন্দনে আগামী ২৮ জুলাই শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘পঞ্চম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’। চার দিনব্যাপী আলোচিত এই উৎসব চলবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের উৎসবে বাংলাদেশের ৪৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ জানান, উৎসবের চলচ্চিত্র বাছাইয়ের জন্য সম্প্রতি বৈঠকে বসেছিলেন তারা। সেখানে প্রাথমিকভাবে ৪৫টি চলচ্চিত্র বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৩৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, পাঁচটি প্রামাণ্যচিত্র ও দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।
প্রাথমিক এই তালিকায় কোরবানির ঈদে মুক্তি পাওয়া হিমেল আশরাফ পরিচালিত এবং শাকিব খান ও ইধিকা পাল অভিনীত ‘প্রিয়তমা’, রায়হান রাফি পরিচালিত আফরান নিশো-তমা মির্জা জুটি অভিনীত ‘সুড়ঙ্গ’, অপু বিশ্বাস-সায়মান সাদিক অভিনীত এবং বন্ধন বিশ্বাস পরিচালিত ‘লাল শাড়ি’ ও চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত মাহফুজ আহমেদ-শবনম ইয়াসমিন বুবলী অভিনীত ‘প্রহেলিকা’র নাম আছে।
এ ছাড়া গত বছরের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের জোয়ার তোলা চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত সিনেমা ‘হাওয়া’ এবং রায়হান রাফি পরিচালিত বিদ্যা সিনহা সাহা মিম-শরিফুল রাজ অভিনীত ‘পরাণ’ দেখানো হবে উৎসবে।
প্রাথমিক তালিকায় আরও রাখা হয়েছে অভিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত নভেরা চৌধুরী অভিনীত ‘রিকশা গার্ল’, ‘জেকে ১৯৭১’, নুসরাত ইমরোজ তিশা অভিনীত ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’, ‘রেডিও’, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’, ‘নকশীকাঁথার জমিন’, ‘শ্যামা কাব্য’, ‘দু:সাহসী খোকা’, ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’, ‘গুণিন’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘দামাল’, ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’, ‘পাপপূণ্য’, ‘সাঁতার’, ‘মা’, ‘দেশান্তর’, ‘স্ফুলিঙ্গ’, ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘বিক্ষোভ’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘নোনা জলের কাব্য’, ‘মৃধা বনাম মৃধা’, ‘কূড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’, ‘গলুই’, ‘গণ্ডি’, ‘ন ডরাই’, ‘আলফা’, ‘পুত্র’, ‘আয়নাবাজি’, ‘দেবী’ ও ‘গেরিলা’।
প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে রয়েছে ‘হাসিনা এ ডটারস টেল’, ‘অবিনশ্বর’, ‘একটি দেশের জন্য’, ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’, ‘কাঙ্গাল হরিনাথ’।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে রয়েছে ‘ওমর ফারুকের মা’ ও ‘ধর’। ‘পঞ্চম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও।
এ ছাড়া বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের একঝাঁক তারকাশিল্পীও থাকছেন উৎসবে। প্রসঙ্গত একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে দেশে-বিদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সাফল্যের জোয়ার বইছে। দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের মাত করে দিয়েছে একাধিক চলচ্চিত্র। বিশেষ করে গত রোজার ঈদের পাশাপাশি অতি সম্প্রতি কোরবানির ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক চলচ্চিত্র বেশ সাফল্য পেয়েছে।
এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলোর সাফল্যের পাল্লা যেন একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী যে হারে বাড়ছে তাতে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত কোরবানির ঈদে মুক্তি পাওয়া বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই এবার যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। দেশের বাইরে বিদেশের বিভিন্ন হলে সমানতালে পাল্লা দিয়ে চলেছে। দর্শকরা অনেকটা প্রতিযোগিতা করে টিকিট কেটে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উপভোগ করছেন এটা কম কথা নয়।
এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরছে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে কলকাতায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের উৎসব বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করার আন্দোলনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ