সম্প্রতি চিত্রনায়িকা পরীমনিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ-ডিবি।
তবে অভিযোগ উঠেছে পরীমনিকে শারীরিক নির্যাতনের ব্যাপারে সহযোগিতা করেন তারই ঘনিষ্ট বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমি। পরীমনির আগেও আরো দুই চিত্রনায়িকাকে ফাঁদে ফেলেছিলেন অমি। একটি জাতীয় দৈনিক এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, অন্তরঙ্গ ছবি ধারণ করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তুহিন সিদ্দিকী অমির ফাঁদে পড়া ওই দুই চিত্রনায়িকা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন।
তবে ওই দুই চিত্রনায়িকার নাম উল্লেখ করা না হলেও তাদের একজন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। তিনি ওপার বাংলায়ও সমান জনপ্রিয়। গত দুই বছর ধরে তিনি আর কলকাতায় যাননি। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট আরেকজনকে তিনি বিয়ে করলেও তার আর সংসার টেকেনি।
অমির ফাঁদে পড়া আরেক নায়িকার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি নির্মাণ করে বিখ্যাত হওয়া একজন প্রয়াত পরিচালকের হাত ধরে রুপালি পর্দায় আগমন ঘটেছিল। তিনটি ছবি করেই আলোচিত হয়েছিলেন। তবে তিনি এখন চলচ্চিত্রে নিয়মিত না। রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনি সংসার করছেন।
অমির সঙ্গে ওই দুজন নায়িকার পরিচয় হয়েছিল চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির একজন দাপুটে পরিচালকের মাধ্যমে। এর মধ্যে একজনকে গত বছরে ঢাকার একটি ক্লাবে নিয়ে যান অমি। সেখানে বিশেষ কৌশলে দুজনের অন্তরঙ্গ একটি ছবি তোলেন অমি। এরপর থেকে ওই ছবি দেখিয়ে নায়িকাকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। পরে কৌশলে তিনি রক্ষা পান।
আরেকজন নায়িকাকে একইভাবে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন অমি। পরে ওই নায়িকা পুলিশকে বিষয়টি জানানোর হুমকি দিলে অমি তার পথ থেকে সরে যান।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর উত্তরার মাফিয়া জগতের বড় নিয়ন্ত্রণ ছিল অমির হাতে। মাদক ব্যবসা ও নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত অমি নিজের ব্যবসায়িক কাজ হাসিল করতে সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করতেন। নারীদের নিয়ে দেশের বাইরেও ঘুরতে যেতেন। অর্থ ও দামি গিফটের মাধ্যমে অনেক নায়িকা, মডেলকে নিজের কব্জায় নিতেন অমি।
মামলার প্রধান সমন্বয়কারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মো. মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সোমবার সকালে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন তিনি।
ওই দিনই প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে মাদক ও ইয়াবা জব্দ করা হয়।
নয়া শতাব্দী/ এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ