ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্মাণ হচ্ছে শাবনূরের বায়োপিক!

প্রকাশনার সময়: ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৫০

ঢাকাই চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র, দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। চলচ্চিত্রের বর্নাঢ্য ক্যারিয়ার তার। অসংখ্য সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন শাবনূর।

শাবনূর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী রাতে’ ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। কিংবদন্তি নির্মাতা এহতেশাম পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন তৎকালীন ক্রেজ সাব্বির। তবে চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িকভাবে সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। পরে চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র সঙ্গে জুটি বেঁধে অন্তত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাবনূর। যার প্রায় সবগুলোই ছিল ব্যবসায়িকভাবে সফল।

সালমান শাবনূর জুটি সে সময় তো বটেই এখনও ভক্তদের কাছে সমান জনপ্রিয়। সালমান শাহ প্রয়াত হলেও এখনও সমান তালে জনপ্রিয় শাবনূর। এছাড়া আরও অনেক নায়কের সঙ্গে জুটি বেধে অসংখ্য চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন শাবনূর। সবশেষ ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পাগল মানুষ’ চলচ্চিত্রে দেখা গেছে শাবনূরকে।

এরপর বেশ কয়েকবার ফেরার কথা বললেও সিনে পর্দায় আর পাওয়া যায়নি জনপ্রিয় এ নায়িকাকে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সিডনি শহরে সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছেন শাবনূর। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেই পর্দায় অনুপস্থিত তিনি। তবে শাবনূর যে এখনও সমান জনপ্রিয় তার পরিচয় পাওয়া গেল জন্মদিনে। এদিন পরিচালক, সহ-অভিনেতা এবং ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন শাবনূর।

২০০৫ সালে নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন শাবনূর। শাবনূরের ক্যারিয়ারের শেষ দিকের নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। এই নির্মাতার ‘দুই নয়নের আলো’ ছাড়াও শাবনূর অভিনীত ‘মা আমার চোখের মণি’, ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রশংসিতও হয়েছে। সেই শাবনূরকে নিয়ে বায়োপিক নির্মাণের ঘোষণা করতে চান নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। গত শনিবার শাবনূরের জন্মদিনে এমন ইচ্ছে কথা প্রকাশ করেন এই নির্মাতা।

এ প্রসঙ্গে মানিক বলেন, আমার অনেক দিনের ইচ্ছা তার বায়োগ্রাফি নির্মাণ করার। এটা একদিকে যেমন তাকে সম্মান জানানো হবে, অন্যদিকে বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরাও অনেক তথ্য জানতে পারবে।

এই নির্মাতা আরও বলেন, এ বিষয়ে শাবনূরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে আমার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করছি খুব শিগগিরই কাজটা শুরু করতে পারব।

অবশ্য এ বিষয়ে স্বয়ং নায়িকার কোনো মন্তব্য জানা যায় নি। তবে তরুণ নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের প্রতি শাবনূরের আস্থা আছে। তাই সেক্ষেত্রে কাজটি হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ব্যক্তিগত জীবনে সালমান শাহর সঙ্গে নানা স্কান্ডাল এবং বিয়ে বিচ্ছেদের বিষয়টির কতভাগ সত্য তুলে ধরতে পারবেন সে বিষয়েও যথেষ্ট শঙ্কার অবকাশ রয়েছে। এই বিষয়টি এড়িয়ে গেলে বায়োপিক ততটা সমৃদ্ধও হবে না। সুতরাং এ বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে নির্মাতাকে।

এদিকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত কবরীর পরেই শাবনূরকে ‘ভার্সেটাইল মহানায়িকা’ বলেই অভিহিত করলেন শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোরশেদ কনকচাঁপা। সামাজিকমাধ্যমে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি।

জন্মদিনে শাবনূরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কনকচাঁপা লেখেন, আমি আমাদের এই মহানায়িকার আনন্দিত সুখী সুদীর্ঘ জীবন কামনা করছি। শাবনূরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার পক্ষ থেকে রইলো অগণিত শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা। শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময় শিল্পীর নাম। যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না! তার অভিনয় শৈলী, তার উচ্চারণ, তার দৈহিক সৌন্দর্য, তার চাঁদখানা মুখশ্রী গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ।

তার রেশ এখনো কাটেনি, কাটবেও না কখনও। এই ‘শাবনূর’ এপিসোড থেকে দর্শক বেরুতেও চায়নি, চাইবেও না। কারণ এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।

শাবনূরের সিনেমার গান গাওয়ার প্রসঙ্গে এই কণ্ঠশিল্পী লেখেন, আমি বলা যায় প্রথম থেকেই তার জন্য গাইছি। আশ্চর্যজনক কথা যে তার সঙ্গে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। আমি আমার মতো গেয়েছি তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন। কিন্তু যখন পিকচারাইজেশন দেখেছি তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে এটা আমি গেয়েছি, মনে হয়েছে এটা যেন তারই কণ্ঠ! এই যে একাকার হয়ে যাওয়া এই ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই।

তিনি আসলে আমাদের কবরীর পরে ভার্সেটাইল যাকে বলে সেই উঁচুমানের মহানায়িকা। সিরিয়াস অভিনয়, হাসির অভিনয়, ছটফটে দুরন্ত কিশোরীর অভিনয় সবই দুর্দান্ত তবে তার ভয়ংকর সুন্দর চোখে যখন অশ্রু ঝরে তখন একটা কথাই মাথায় আসে ‘ফুল নেব না অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল’।

তার কাঁচভাঙা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধহয় এভাবে অনুভব হয়। সাধারণভাবে দেখা সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কীভাবে! বাস্তবে নিরাভরণ শাবনূরকে দেখে চমকে উঠেছি তার বিরল সৌন্দর্য ও চোখের চাহনিতে। তাকে নিয়ে আমি খুবই গর্বিত।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ