বিজয়ের অন্তিম মুহূর্তে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সজ্জিত হয়েছে বিজয়ের আলোক সজ্জায়৷ রক্তিম সূর্য অস্ত গিয়ে সন্ধ্যাকে স্বাগত জানানোর মধ্যে দিয়ে ক্যাম্পাসে শুরু হয় আলোর মিছিল৷ নানা রঙের আলোতে সজ্জিত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের সবুজ আঙিনা। বিজয়ের সাজে লাল, সবুজ আলোর ভিড়ে কালেভদ্রে দেখা মিলে হলুদ, সাদা কিংবা নীল রঙের। লাল, সবুজের মতো প্রত্যেকটি আলোর যেন নিজস্ব ভাষা, পরিচয় আছে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, ১৬টি আবাসিক হল থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে ঠাঁই মিলেছে বাহারি আলোর ঝলকানি। ক্যাম্পাসের এমন চোখধাঁধানো আলোক সজ্জায় মুগ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, বাঙালির ২৩ বছরের নির্যাতন-নিপীড়নের অবসান হয়েছে এ দিনে। বছরের অন্য সময়ে দেশের প্রতি যতটুকু টান থাকে ডিসেম্বর মাসে তা আরো কয়েকগুন বেড়ে যায়৷ ক্যাম্পাসের লাল, সবুজ আলোর ঝলকানি মনে করিয়ে দেয় বিজয়ের সেই বীরত্বগাঁথা।
বিজয় দিবসের অন্তিম মুহূর্তে ক্যাম্পাসের ফেরিওয়ালাদেরও ব্যস্ত সময় কাটছে। দেশের লাল-সবুজের পতাকা ও বিজয়ের লোগো সংবলিত ফিতা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে লাল-সবুজ পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায় ফেরিওয়ালাদের৷
৫১তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিন ব্যাপী বিজয় মেলা এবং সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে বিকেল সাড়ে ৪টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ বিজয় দিবসে সূর্যোদয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক হলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, উপাচার্যের নেতৃত্বে সকাল সোয়া ৭টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ। এছাড়া বিভিন্ন হল প্রশাসন এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে।
এ ছাড়া বিজয় দিবসের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য জনপ্রতি ৪৯০ টাকা বাজেটের বিশেষ প্রীতিভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি ও আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ হেল কাফি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের কুপনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। যা দিয়ে তারা জনপ্রতি ৪৯০ টাকা মূল্যমানের খাবার খেতে পারবে। এক্ষেত্রে হল থেকে ৬০ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে ৪০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে গতবারের তুলনায় এবার জনপ্রতি ২৫ টাকা কমিয়ে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কুপনের দাম বাড়ানো হয়নি। গতবারের মতো এবারও আমরা খাবারের মেন্যু হিসেবে পোলাও, রোস্ট, খাসির রেজালা, মুগডাল, মিষ্টি ও ফল রেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হলের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য থাকছে এবারের আয়োজন। চেষ্টা করবো যেন এই দামেই খাবারের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা যায়।
বিজয়ের আলোক ছোঁয়ায় জাবি ক্যাম্পাস যখন মহা আয়োজনে সজ্জিত তখন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মাঝেও বিজয় দিবসকে ঘিরে এক উৎসবমুখর আবহ বিরাজ করছে৷
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ