ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তবাংলা : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন

প্রকাশনার সময়: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:২৩

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন পতাকা। সেই আত্মত্যাগী শহীদদের আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ১৯৯৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তবাংলা ভাস্কর্য স্থাপিত হয়। ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর চিত্রকর রশিদ আহমেদের নকশার ভিত্তিতে নির্মিত এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইনাম-উল হক।

ইসলামের মৌলিক নীতিমালা অক্ষুন্ন রেখে এই আধুনিক স্থাপত্যটি নির্মিত হয়েছে। মুক্তবাংলা ভাস্কর্যটির ৭টি স্তম্ভ সম্বলিত গম্বুজের উপর রয়েছে দৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার রাইফেল যা ৭ সদস্যের মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীসভার প্রতীক।

প্রতিটি স্তম্ভ বিস্তৃত প্রসারিত হাত ধরাধরি উল্লসিত অবয়বে আধুনিক ইসলামী স্থাপত্য ভিত্তিক আর্চে রচিত, চোখে লাল সূর্য উদয়ের প্রত্যাশা, সর্বনিম্ন বড় ইট যা লাগাতার আন্দোলনের নির্দেশক। নয়নাভিরাম ভাস্কর্যটির উপর থেকে চতুর্থ ধাপে রয়েছে- লাল সিরামিক ইট যা আন্দোলন ও যুদ্ধের প্রতীক। দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে- কালো পাথর যা শোক ও দুঃখের প্রতীক। তৃতীয় ধাপে রয়েছে- সাদা মোজাইক যা সন্ধি ও যোগাযোগের প্রতীক এবং বেদির মূল মেঝে রয়েছে সবুজ মোজাইক ও নীল টাইলস যা শান্তির প্রতীক। সমুদয় অবকাঠামোটি সাতটি আর্চ সম্বলিত একটি অর্ধ উদিত (উদীয়মান) সূর্য।

দৃষ্টিনন্দন এই ভাস্কর্যটি ক্যাম্পাসকে করেছে আরো মনোমুগ্ধকর। এটি ক্যাম্পাসের হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীর প্রাণে মিশে আছে। অবসর সময়ে ভাস্কর্যটির পাশে বসে আড্ডা দিতেও দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ডানদিকে সবার নজর কাড়ে ব্যতিক্রমী এই রুচিশীল স্থাপত্য কর্মটি। ভাস্কর্যটি তার সৌন্দর্যের জন্য ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদেরও মনে জায়গা করে নিয়েছে। মুক্তবাংলার সৌন্দর্য ও বিশেষত্ব উপভোগ করতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজা কুমার বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তবাংলা ভাস্কর্যটি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নিদর্শন বহন করে। আমরা এর পাশে বসলে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এবং আমাদের দেশপ্রেম জাগ্রত হয়।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন শেখ বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতিচিহ্ন এটি। কিন্তু সঠিকভাবে পরিচর্যা না করায় দিনদিন এর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ