ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে নোবিপ্রবির লুমিনারি 

প্রকাশনার সময়: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৪৭

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। সমাজের এই ভবিষ্যত প্রজন্ম কেমন হবে তা নির্ভর করে শিক্ষার উপর। শিশুদের মাঝে শিক্ষার প্রসারকে আরো বেগবান করার উদ্দেশ্য নিয়ে ৭ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সেচ্ছাসেবী সংগঠন লুমিনারি।

স্কুলমুখী হওয়ার বয়সে সমাজের অনেক শিশুই পা রাখতে পারে না স্কুলের আলোকিত গণ্ডিতে। এর মূল কারণ অর্থের অভাব ও পর্যাপ্ত সঠিক দিকনির্দেশনা। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের শিক্ষার আলো প্রদানের চিন্তায় ২০১৫ সালে নোবিপ্রবির স্বপ্নবাজ কয়েক তরুণ প্রতিষ্ঠা করেন বিনামূল্যে পাঠদানের প্ল্যাটফর্ম ‘লুমিনারি’। এর স্লোগান ‘প্রত্যেক শিশু মানুষ হোক আলোর ঝর্ণাধারায়।’

লুমিনারির মূল পুঁজি ছিল সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত শিশুদের শিক্ষিত করে তোলার অদম্য ইচ্ছা। সুবিধাবঞ্চিত মাত্র ৭ শিশুকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল লুমিনারি। নিঃস্বার্থভাবে কাজ শুরু করা সংগঠনটি প্রশংসার ঝুড়ি হাতে সাত বছর পেরিয়ে আজ প্রায় ১১০ জনের পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকার শিশু কিশোররা যেন সহজেই লুমিনারির ক্লাসে আসতে পারে এজন্য প্রতি শুক্রবার বিকেলে নেওয়া হয় ক্লাস।

দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর ধরে লুমিনারির সাথে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পূজা মজুমদার। নিজের স্নাতক জীবনে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। এই সংগঠনের হাত ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের শিশুরা শিক্ষার আলো নিয়ে বড় হবে এমনটাই প্রত্যাশা তার।

শুধু পূজা মজুমদার নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী কাজ করে যাচ্ছেন লুমিনারিতে। সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে শিশুদের পাঠদান করিয়ে একধরনের আনন্দ পায় তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী মোহাম্মদ আল আমীন বলেন, লুমিনারিতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধিতেও কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের শিশুদের মাঝে যেন শিক্ষার আলো ছাড়িয়ে যায় এজন্য আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়েও খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি।

ছোটোবেলা থেকেই লুমিনারিতে ক্লাস করছে শাওন। লুমিনারিতে ক্লাস করে স্কুলে ভালো রেজাল্টও করছে সে। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শাওন জানান, পড়া না বুঝলে লুমিনারির বড় ভাইয়া আপুরা পড়া বুঝিয়ে দেয়। এতে করে খুব সহজেই নিজের পড়া আয়ত্ত করতে পারছি।

শিশুদের সুশিক্ষা দিয়ে মানসিক বিকাশ সাধন ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনে অনুপ্রেরণা দানকারী লুমিনারি শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ থাকে না; আয়োজন করে থাকে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি ও অঙ্কনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। সংগঠনের সদস্যদের অর্থায়নে প্রয়োজনীয় শিক্ষাসামগ্রী- ব্যাগ, বই, খাতা, কলম, রঙ পেন্সিল ইত্যাদি সরবরাহ করা হয় পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া দেশপ্রেম, সামাজিক সচেতনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ