জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে ‘বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় পর্যটনে রোহিঙ্গা অভিবাসনের প্রভাব নির্ধারণ’ শীর্ষক উন্মুক্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগের ১১৩ নং কক্ষে উন্মুক্ত পিএইচডি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তৃতীয় উন্মুক্ত সেমিনারে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন তার গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। এর আগে তার পূর্বের দুইটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
পিএইচডি গবেষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। উক্ত অঞ্চলের অনেক মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে জোরপূর্ব অভিগমন হওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আসার পর কারণে কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
বিশেষ করে পরিবেশগত ও আর্থ-সামাজিক প্রভাব অনেক বেশি। বিশেষ করে বন উজাড়, পানি দূষণ, বর্জ্য সমস্যা। অর্থনৈতিক প্রভাব বিশেষ করে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পর্যটন শিল্পে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান হারানো, বাংলাদেশ ব্যবসা বাণিজ্যের।
এছাড়া সামাজিক প্রভাব বিশেষ করে নিরাপত্তা সংকট, মাদক ব্যবসা, অপহরণসহ অন্যান্য প্রভাব যা পর্যটন শিল্পের উপর হুমকি।
তিনি আরও বলেন, আমার গবেষণার বিষয় হলো- রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে কক্সবাজার এলাকায় পর্যটন শিল্পের উপর কি ধরনের প্রভাব পড়েছে তার একটি সমীক্ষা করা এবং দেশের পলিসি মেকারদের একটি সাজেশন্স দেওয়া, যাতে তারা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সঠিক কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমাদের গবেষণায় প্রাথমিক ও গৌণ উভয় ধরণের তথ্যই ব্যবহার করা হবে।
গবেষণার তত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে শুধু স্থানীয় পর্যায়ে পর্যটনের পরিবেশ বিপর্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় হচ্ছে। এটা সামগ্রিক রাষ্ট্রের পরিবেশ জন্য ও ঝুঁকি।
পৃথিবীর সেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের একজন ও অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান, পরিবেশ বিপর্যের জন্য রোহিংগাসহ স্থানীয় জনগণ ও দায়ী। তবে আত্ন-সামাজিক নিরাপত্তার জন্য রোহিংগাদের ফেরত যাওয়ার বিকল্প নাই।
অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খন্দকার বলেন, এ ধরনের গবেষণায় সরকার পর্যায়ে অনেক কাজে আসবে।
এ সময় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পিএইচডির তত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন, লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মনিরুজ্জামান। প্রশ্ন-উত্তর সন্তোষজনকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে উপস্থিত গবেষকরা মনে করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান। রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সামাদ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিগার সুলতানা, সহকারী অধ্যাপক ড. এন. এম. রিফাত নাসের, ড. নাজমুন নাহার, মো. আশ্রাফ উদ্দীন, রিফফাত মাহমুদ, আইইআরের প্রভাষক শানেওয়াজ চন্দন ও মতিয়ার রহমান।
এছাড়াও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামসুল কবির ও কামাল হোসেন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. লোকমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন। উন্মুক্ত সেমিনারে সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, শাহনাজ পারভীন ও কাজী ফারুক হোসেনসহ অন্যান্য গবেষকবৃন্দও ছিলেন।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ