ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোগান্তির শেষ নেই শেকৃবির ছাত্রী হলে

প্রকাশনার সময়: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:০৯

ডাইনিং-ক্যান্টিনে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি, মানহীন খাবার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, খাবার পানির সংকট, অনিয়মিত গ্যাস সংযোগসহ নানা ভোগান্তিতে রয়েছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আবাসিক দুইটি হলের শিক্ষার্থীরা। নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের অভাবে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা।

সম্প্রতি গত মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) শেখ হাসিনা হলের ৯০১নং রুমে বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার ও রুমে গেস্ট থাকার অভিযোগে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করার প্রেক্ষিতে আবাসিক শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা হলের একাধিক ছাত্রী নাম না প্রকাশ করার শর্তে নয়া শতাব্দীকে জানান, হলের বেশিরভাগ ওয়াশরুম গুলোতে ঝর্ণা ও হাতল নষ্ট, সাবান রাখার জায়গা নেই। রাজনৈতিক নেত্রীদের ফ্লোরে নিয়মিত পরিস্কার করা হলেও বাকি তলাগুলো বেশিরভাগ সময় থাকে অপরিচ্ছন্ন। হল থেকে নিয়মিত গ্যাসবিল নেওয়া হলেও দীর্ঘদিন গ্যাসের চুলা খুলে রাখা হয়েছে।

কৃষি অনুষদের ৩য় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী নয়া শতাব্দীকে বলেন, একদিন খাবার খেয়েই পেটের সমস্যা হয় কিন্তু প্রতিনিয়ত এ সমস্যা হয়েই থাকে। মানোন্নয়নের উদ্যোগ নেই হল প্রশাসনের। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ দিলেও ঠিক করতে উদ্যোগ নেন না তারা। উল্টো শিক্ষকদের থেকে সিট বাতিলের হুমকি ও কটু কথা শুনতে হয়। এমনকি আমাদের হলে শিক্ষার্থী বান্ধব অভিভাবক হিসেবে কেউ নেই। সকল হলের প্রভোস্ট পরিবর্তন হলেও এত সমস্যার পরও দীর্ঘদিন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট পরিবর্তন করা হয়না। অন্যদিকে ছাত্রী প্রতিনিধিরাও হল প্রভোস্টের ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন ফলে ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না আমাদের।

সার্বিক বিষয় নিয়ে কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. আয়েশা আক্তারকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে কল কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল দিলেও তিনি আর রিসিভ করেননি।

ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, গত জুন মাস থেকে পানির সমস্যা আমাদের পিছু ছাড়ছে না। এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে সকল ভবনে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করলেও এখানে বঞ্চিত মেয়েদের দুটি হল। খাবার পানির জন্য শুধুমাত্র নিচতলায় একটি ফিল্টার রয়েছে তাতে প্রায় সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিতে হয়। অন্যদিকে ফুটিয়ে খাবো সেই উপায়ও নেই। পানি ফুটানোর সামান্য বৈদুতিক হিটারের জন্যেও চেকিং হয়। পানির সমস্যার সমাধানে তেমন কোনো উদ্যোগও নিচ্ছেনা হল প্রশাসন। অন্যদিকে গ্যাস বিল নেওয়া হলেও গ্যাস লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট বলেন, আমাদের হলে পানির একটা ফিল্টার চালু আছে। পানির সংকট নিরসনের জন্য বড় ফিল্টার লাগানো হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করি। গ্যাসের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্যাসের বিল হল থেকে নেওয়া হয়না যা নেওয়া হয় তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, পানির কোন সমস্যা নাই, শিক্ষার্থী বেশি হওয়ার কারণে এমনটা মনে হচ্ছে। তবে দুই হলের প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্ট সকল সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করতেছে। আর হলের খাবার খেয়েই যে অসুস্থ হচ্ছে এটার তো কোন প্রমাণ নেই, বিভিন্ন সমস্যার কারণেই অসুস্থ হতে পারে।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ