ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফল সংশোধনের সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান আছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ফল বিপর্যয় সংশোধন করে সুষ্ঠু ফলাফল প্রকাশ করার কথা বলে তাদেরকে দশবারের অধিক আশ্বাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু সমাধান না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কালক্ষেপণ করেছে। তাই ফল সংশোধনের সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনশনে থাকবেন তারা। এছাড়া ফল বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তির দাবিও জানান তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘প্রাপ্য ফলাফল দিতে হবে’, ‘হুমকি-ধামকির বিচার চাই’, ‘ছাত্রবান্ধব বিভাগ চাই’, ‘আমরণ অনশন চলছে চলবে’, ‘ছাত্রদের নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে আমাদের সমস্যা সমাধানের কথা বলে ১০-১২ বার সময় নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রত্যেকবার তারা সমাধানের কথা বলে কিন্তু তারা যে সময় বেধে দিতো তারপরে গেলে তারা বলতো আবার কিছুদিন সময় দাও। সর্বশেষ গত নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় নিয়েছিলো প্রশাসন। কিন্তু এখনো বিষয়টির সমাধান হয় নাই, আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই। এছাড়া বিভাগের কিছু শিক্ষকদের দ্বারা আমরা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমরা এই মানসিক যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি চাই।’
বায়েজিদ হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসন প্রতিবার সময় নেয়। কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। আজকে না সাত দিন পরে আসো, আমাদের আর কিছুদিন সময় দাও -এসব বলে তারা কালক্ষেপণ করছে। এবার আর আমরা কোনো আশ্বাস মানবো না। যতদিন না ফলাফল ঠিক করা হবে ততদিন আমরা আমাদের অনশন চালিয়ে যাবো। এতে মরণ হলে হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৩৫ জন নিয়মিত ও ৩ জন অনিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই প্রথম সেমিস্টারে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। গত ২২ এপ্রিল তাদের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হয়ে ওই মাসেই শেষ হয়। ২৫ আগস্ট তাদের ফল প্রকাশিত হয়। সেই ফলে ৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জনের ফল প্রকাশ হয়। ৬ জন নিয়মিত ও দুজন অনিয়মিত শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশিত হয়নি, এছাড়া ৬ শিক্ষার্থী একটি করে কোর্সে ফেল করেছেন। ওই দিন ফলাফলে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগের অফিস কক্ষে ও সভাপতির কক্ষে তালা লাগিয়ে বিভাগ বন্ধ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে ছাত্র-উপদেষ্টার আশ্বাসে তালা খুলে দেন তারা। এ সময় ছাত্র-উপদেষ্টা অতিদ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ