ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

পিঠার ধোয়ায় শীতের হাওয়া

প্রকাশনার সময়: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১৫:১৮

সকাল বেলায় রোদের হাসি, লাগে ভারি মিঠা; হালকা রোদে খেতে মজা, শীতের গরম পিঠা। শীতকাল বাংলাদেশের প্রধান তিনটি ঋতুর মধ্যে অন্যতম। বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। পিঠা-পায়েস সাধারণত শীতকালের রসনাজাতীয় খাবার হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত এবং মুখরোচক খাদ্য হিসেবে বাঙালি সমাজে আদরণীয়। আত্মীয়স্বজন ও পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় ও মজবুত করে তুলতে পিঠা-পুলির উৎসব বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম শীতকালেই বেশি পড়ে।

ক্যালেন্ডারের পাতায় এখনও শীতকাল না আসলেও প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। ভোরে দেখা মেলে ঘাসের উপর শিশির বিন্দু৷ শীতের আমেজ আসতে না আসতেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বসেছে মৌসুমি পিঠার দোকান।

ভোরবেলা ও সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম গেট এবং ২য় গেট সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে বসে ছোট ছোট পিঠার দোকান। অনেকগুলো চুলায় একসঙ্গে তৈরি হয় পিঠা। পাওয়া যায় ভাপা, চিতুই, ডিম চিতুই, তেলভাজা পিঠা প্রভৃতি। গরম পিঠার সঙ্গে নানা রকম ভর্তায় আড্ডা যেন আরও জমে উঠে। কালোজিরা ভর্তা, সড়িষা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, ধনিয়া ভর্তার সাথে মাত্র ১০ টাকায় পরিবেশন করা হয় চিতুই পিঠা। এছাড়া ১৫ টাকায় ভাপা পিঠা, ৩০ টাকায় ডিম চিতুই পিঠা এবং ১০ টাকায় তেল ভাজা পিঠা পাওয়া যায়।

আতপ চালের আটা দিয়ে চিতুই পিঠা আর সিদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা। পিঠা তৈরির কারিগর হিসেবে দেখা যাচ্ছে নারীদের। গরম গরম পিঠা শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা। পিঠার আড্ডায় কেউবা প্রিয়তমার কাঁধে মাথা রেখে করছে আলাপন আবার কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে মেতে উঠেছে গল্প আড্ডায়। কিছু দোকানে বসার ব্যবস্থা না থাকলেও পিঠাপ্রেমীরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন পিঠার জন্য।

পিঠা খেতে আসা মানব সম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সিয়াম বলেন, ‘শীত আর পিঠা যেন সমার্থক। শীতে পিঠা খাওয়ার আমেজই আলাদা। এটা বাঙালির ঐতিহ্য। রাত ১১ টায় হলের লিফট বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও পিঠা খেতে চলে আসি। সিঁড়ি বেয়ে হলে উঠতে হলেও পিঠা খাওয়ার নেশা ছাড়তে পারি না।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান সজিব বলেন, ‘বন্ধুদের সাথে বসে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। এই শীতের শীতল বাতাসে বসে এক সাথে পিঠা খাচ্ছি, গান করছি, আড্ডা দিচ্ছি অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইটে পিঠা বিক্রেতা হালিমা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকেই আমাদের পিঠা বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাইরে থেকে অনেকেই এখানে পিঠা খেতে আসেন। প্রতিদিন প্রায় ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়। খরচ বাদ দিয়েও প্রতিদিন ৫০০-৭০০ টাকা লাভ হয়। শীত বাড়লে বিক্রি আরও বাড়বে।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ