যে ধূমপান করে না, সে কখনও ফেন্সিডিলে আসক্ত হতে পারে না। আর এই মাদকের বিষয়টাকে সামনে এনে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের বাবা কাজী নূর উদ্দিন।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বুয়েটের শহীদ মিনারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ দাবি করেন। মানববন্ধনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ফারদিন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্তের দাবি জানান।
এসময় পরশের বাবা বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের কেউ ধুমপান পর্যন্ত করে না। আমার সন্তান বুয়েটের ক্যাম্পাসে ছিলো, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে তার যাতায়াত ছিলো। কেউ বলতে পারেনি সে ধূমপান করতো।
পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আস্থা রাখছি। কারণ আমার সন্তান কারও শত্রু নয়। এমন কী, আমার পেশাগত জীবনেও কোনো শত্রু তৈরি করিনি। র্যাব, ডিবি, পিবিআইয়ের ওপর আস্থা রাখতে চাই। তারা তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করবেন বলে আশা করি। তারা আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়েছেন তবে এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট জানায়নি।
মানববন্ধনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ‘পরশকে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে’ বলেও অভিযোগ করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন,‘পরশকে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। এ হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পরশের পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।
সন্তান নিখোঁজের পর রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ফারদিনের পরিবার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জিডির ৪৮ ঘণ্টা পরেও পুলিশ জিডির তদন্ত বা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট পাইনি। মরদেহ পাওয়ার আগ পর্যন্ত থানার কার্যক্রমে আমরা খুশি না।
ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে আসামি করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর সর্বশেষ বুশরার সঙ্গে দেখা যায়। তাই তাকে আসামি করা। আমার সন্তান বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ে মায়ের কাছে যে গন্তব্যের কথা বলে বের হয় এর বাইরে কখনও যায়নি। তার বুয়েটে আসার কথা ছিলো। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, বুশরার সঙ্গে কেনো তাকে এতো সময় কাটাতে হলো। যার পরদিন পরীক্ষা তার রাত ১০টা পর্যন্ত বাইরে থাকার কথা নয়। সত্য বিষয়টা বের করতে হবে- কী কারণে তাকে বুশরার কাছে যেতে হলো।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গত ৭ নভেম্বর রাতে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানান ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ