১৪ দফা দাবিতে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র কার্যালয় তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মচারীরা। এ অবস্থায় ভিসির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার কর্মচারীরা দাবি আদায়ের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসেকে অবরুদ্ধ করেন। এতে ভিসি নিজ কার্যালয়েই অবরুদ্ধ অবস্থায় অবস্থান করেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ৩০ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উক্ত স্মারকলিপিতে ১৪ দফা দাবি জানানো হয়। কিন্তু স্মারকলিপি প্রদানের পরেও বুধবার (২ নভেম্বর) কেয়ারটেকার পদের নিয়োগ বোর্ড রাখায় তারা ভাইস-চ্যান্সেলরের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, অভ্যন্তরীণ রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ আন্দোলনকারীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ভাইস-চ্যান্সেলর তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে আন্দোলনকারী ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি এস.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতি’র কার্যকরী পরিষদ ৩৯তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ৩য় শ্রেণির সকল সদস্য কর্মবিরতি পালন করবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট এবং জরুরি সেবা সমূহ চালু থাকবে। এছাড়া অন্যান্য সকল পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ৭৩ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে। ২০১৯ সালের ২০ আগস্টে আমাদের নিয়োগ হয়। আমাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। ৩য় শ্রেণির আন্দোলনের সাথে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতিও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
কর্মচারীদের ১৪ দফা দাবিগুলো হলো— তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী বাছাই বোর্ড সমূহ দেয়া, নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০% অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান, অভ্যন্তরীন প্রার্থীদের শুধু মাত্র মৌখিক ভাইভা বোর্ডের ব্যবস্থা করা, বিজ্ঞাপিত ১৫টি পদের বিপরীতে ২২ জন এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ করা, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের অসামঞ্জস্য পদকে সামঞ্জস্য করে নীতিমালায় অর্ন্তভুক্ত করা, যথাসময়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করা, ড্রাইভারদের অধিকাল ভাতাসহ টিএডিএ প্রদান করা, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য পৃথক মিনিবাসের ব্যবস্থা করা, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০% টাঙ্গাইলের লোকদের নিয়োগ প্রদান করা, কর্মচারীদের নিয়োগে পোষ্য কোঠা নির্ধারণ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মোটরকার ও মোটরসাইকেলের জন্য কর্পোরেট লোনের ব্যবস্থাকরণ, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির জন্য একটি কার্যালয়ের ব্যবস্থাকরণ, কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেশিও অনুযায়ী গেষ্ট গাউজের ব্যবস্থাকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক এবং কারিগরি কর্মচারীদের দাপ্তরিক সাজ-পোশাকের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র এবং বাংলাদেশের গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কোনো চাকরিজীবী চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে মৃত কর্মচারীর পরিবার থেকে একজন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান করা।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বলেন, অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ