ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভেঙে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সৌন্দর্যবর্ধনকারী ক্যাসিয়া রেনিজারা গাছটি।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে গাছটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে গাছটি কাঁটার উদ্দ্যোগ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. আব্দুর রহমান। তবে শিক্ষকদের বাঁধার কারণে গাছটি কাটতে পারেননি তিনি।
এ ব্যাপারে মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘ঝড়ে ক্যাসিয়া রেনিজারা গাছটি ভেঙে পড়ছে। পরে গাছটি কাঁটতে লোকজন পাঠালে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অফিস থেকে কাঁটতে নিষেধ করা হয়। ডিনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গাছটির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবেগ জড়িত। গাছটি ভেঙে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা কষ্ট পেয়েছে। আজকে গাছটি কাঁটার জন্য লোক এসেছিলো, তখন শিক্ষকরা গাছটি কাঁটতে নিষেধ করেছে। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় সরেজমিনে দেখতে পারিনি। তবে আগামীকাল দেখে ব্যবস্থা নিবো। যদি কেঁটেই ফেলতে হয়, তাহলে সেখানে আরও একটি গাছ যতদ্রুত সম্ভব লাগিয়ে দিবো’।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অন্যতম সৌন্দর্যবর্ধনকারী ছিলো ক্যাসিয়া রেনিজেরা গাছটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে, পুরাতন কলা ভবনের ভিতরে, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে, জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে আরও কয়েকটি ক্যাসিয়া রেনিজারা বৃক্ষ রয়েছে। তবে সেগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রম এটি। আর গাছটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রাঙ্গণে হওয়াতে আলাদাভাবে দৃষ্টি পড়তো দর্শনার্থীদের।
ক্যাসিয়া রেনিজেরা এ দেশীয় কোনো ফুল নয়, এটি মূলত জাপানী ফুল। ২০০০ সালে ড. এ আর খান সর্বপ্রথম ক্যাসিয়া রেনিজেরা বীজ সংগ্রহ করে, চারা উৎপাদন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করেন। ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুল ও বীজ অনেকটা সিম আকৃতির লম্বা দন্ডের মতো। ফুলের ভিতর গোলাকৃতি আকৃতির বীজ, যা আতা ও ডালিম ফলের সঙ্গে অনেকটা তুলনীয়।
ক্যাসিয়া রেনিজেরার বৈজ্ঞানিক নাম হলো- বার্মিজ পিংক ক্যাসিয়া। ফুল গাছের উচ্চতা প্রায় ১০ মিটার হয়ে থাকে। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই ফুল ধরতে শুরু করে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া প্রায় প্রতিটি সময়েই ক্যাসিয়া গাছ থাকে পাতাশূন্য। দৃষ্টিনন্দন ক্যাসিয়া প্রজাপতির ৪০ প্রকার গুল্ম ও বৃক্ষ জাত রয়েছে। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশে মিলিয়ে ১৫টি প্রজাতির দেখা পাওয়া যায়।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ