বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি এবং জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ঘটনায় তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ইমাম হাসান শুভকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রিপন মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়ল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়ল বলেন, ইমাম হাসান শুভর কর্মকাণ্ডে কলেজ ছাত্রলীগের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা বিব্রত, কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংগঠন থেকে সুপারিশ করা হয়েছে।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ইমাম হাসান শুভকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাঠিয়েছি। তার বিষয়ে এখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার বলেন, আমি এ বিষয়টি শুনেছি। প্রয়োজনীয় তথ্যও সংগ্রহ চলছে। উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত সত্য উৎঘাটন করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরআগে রাজধানীর তিতুমীর কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে সেই কলেজের এক ছাত্রলীগ নেতার যৌন হয়রানির শিকার হন বাঙলা কলেজের এক ছাত্রী। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে সেই ছাত্রীকে জিম্মি করে দলবল নিয়ে টাকা আদায় করেন ইমাম হাসান শুভ নামের ওই ছাত্রলীগ নেতা। এই ঘটনার বিচার চেয়ে গত রোববার রাতে রাজধানীর বনানী থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে পরবর্তীতে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
মঙ্গলবার রাতে বনানী থানার ওসি মো.নূরে আযম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, গত রোববার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ছাত্রী ইমাম হাসান শুভ ও তার চারজন সহযোগীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনের নামে অভিযোগ আনেন। অভিযুক্তরা হলো- বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের উপ-মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ইমাম হাসান শুভ, তার সহযোগী তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সাব্বির হাসান রাহুল, রাশেদুল ইসলাম সামি, মো, মেহেরাব হোসাইন ইকরাম এবং কলেজ ছাত্রলীগকর্মী সৈকত সম্রাট।
যৌন হয়রানি এবং বলপূর্বক অর্থ আদায়ের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পেনাল কোডের ৩৮৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ওসি নূরে আযম মিয়া বলেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করতে এস আই সালাউদ্দিন মোল্লাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই সালাউদ্দিন মোল্লা বলেন, এই মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আরো তথ্যের অনুসন্ধান চলছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ