ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলে এক ছাত্রকে রাতভর মারধর করে পুলিশে সোপর্দের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামির সাদিক। তিনি ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। সামির সাদিক ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যরাতে ঢাবির জিয়া হলে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নয়া শতাব্দীকে জানান, হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমাদ উল্লাহ আশরাফ ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রেজভী হাসান সোমবার সারারাত ধরে তাকে জেরা করেন। এসময় তার বইপত্র, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ও মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়। পরে তিনি কেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন পোস্টে লাইক দেয় -এই প্রশ্ন তুলে সরকারবিরোধী ট্যাগ দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। এসময় তাকে পুলিশে সোপর্দ করারও হুমকি দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, নির্যাতনে এক পর্যায়ে গভীর রাতে ঝড়ের মধ্যে ফোন দিয়ে তার মা-বাবাকে বগুড়া থেকে আসতে বলা হয়। এছাড়াও তাকে বলা হয় আজ থেকে যেন সে আর হলে না উঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলে ছাত্রলীগ ব্যতীত অন্য যেকোনো ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের এভাবেই প্রতিনিয়ত হেনস্তা করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুন নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘বিষয়টি সকালে যখন জানতে পেরেছি, তখন আমি খোঁজ নিয়েছি। সমাধান করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ভুক্তভোগী সমাধানে না গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেবে এ রকম বলছে। একই রুমে থেকে যদি কেউ সন্দেহ করে জেরা করে তাহলে সেখানে একজন হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে আমার কিছু করার থাকে না। এখানে ছাত্রলীগ জড়িত না। মূলত বেড মেটের সন্দেহের কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়নি।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সামির সাদিকের বাবা এমতাছুর রহমান বলেন, ‘গতকাল রাতে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে একজন ফোন দিয়ে বলে, আপনার ছেলে নিষিদ্ধ সংগঠন করে, সরকার বিরোধী, আপনি জানেন? আপনার ছেলেকে নিয়ে যান, না হয় পুলিশে দিবো। এ রকম বললে কোনো বাবা-মায়ের ঘুম হয়! বগুড়া থেকে সিত্রাংয়ের কারণে রাতে আসতে পারিনি। সকালের বাসে চলে এসেছি। তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সারারাত কান্না করেছে।’
হল শাখা ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, সাদিককে হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য এ রকম করা হচ্ছে। তাকে সরকারবিরোধী ট্যাগ দিয়ে হল থেকে বের করে নতুন কর্মীদের সেখানে তুলতে চাচ্ছে ছাত্রলীগ।
অভিযুক্ত আহমাদ উল্লাহ আশরাফ ও রেজভী হাসানকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ