ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুগলে চাকরি পেলেন জাবি শিক্ষার্থী নশিন জাহান

প্রকাশনার সময়: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১৭:০৮

গুগল, আমাজনের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয় ‘বিগ টেক’। বাংলাদেশি অনেক তরুণ-তরুণী নিজ দক্ষতায় এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বিশ্বখ্যাত টেক জায়ান্ট গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যুক্ত হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) শিক্ষার্থী মীর নশিন জাহান। তিন বারের চেষ্টার পরে অবশেষে গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যুক্ত হওয়ার জার্নির পেছনের গল্প জানতে নশিনের সাথে কথা বলেছেন নয়া শতাব্দীর জাবি প্রতিনিধি নাফিসা শারমিন

নাফিসা শারমিন : টেক জায়ান্ট গুগলে চাকরি পাওয়ায় কেমন লাগছে আপনার?

মীর নশিন জাহান : ‘গুগলে চাকরি পাওয়ার বিষয়টি খুবই আনন্দের ছিলো। আমি কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত ছিলাম। আইআইটি এবং সিএসই এর টিচাররা আমাকে সবসময় কো-অপারেট করেছেন। আমার বন্ধুরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ডিসকাশন করেছি, বিভিন্ন কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করেছি। আমি বলবো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব সুন্দর প্রোগ্রামিং পরিবেশ রয়েছে। এখানে সবাই অনেক বেশি সহায়ক। এর ফলে যেটি হয়েছে আমার প্রবলেম সলভিং অভিজ্ঞতা বেড়েছে। আর এই অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির কারণে আমি সবখানে সুবিধা পেয়েছি।’

নাফিসা শারমিন : চাকরি পাওয়ার জার্নিটা কেমন ছিলো?

মীর নশিন জাহান : ‘আমার মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষার পরেই আমি মূলত দেশ এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করি। আমি অ্যামাজন, গুগল, আগোডাতে সমসাময়িক সময়ে ইন্টারভিউ দেই। তখন আমার আগোডাতে চাকরির অফার আসে। অন্যদিকে গুগল এবং অ্যামাজনে আমাকে রিজেক্ট করা হয়। আমি আগোডাতে জয়েন করি। এরপর আমি আবার গুগলে চাকরির জন্য এপ্লাই করার ইনভাইটেশন পাই। পরে আমি আবার ইন্টারভিউ দেই এবং চাকরিটা পেয়ে যাই। এর আগে আমি আসলে গুগলে চাকরির জন্য দুইবার চেষ্টা করেছিলাম। দুইবার রিজেক্ট হলেও তৃতীয়বারে আমি সফল হই।’

নাফিসার সাথে দীর্ঘ আলাপে নশিন জাহান টেক জায়ান্ট কোম্পানীগুলোতে চাকরি প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু পরামর্শও দেন। তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের বড় বড় কোম্পানীগুলোতে চাকরির প্রত্যাশা রাখে তাদের প্রতি আমার উপদেশ হলো নিজেকে মেলে ধরো। আগে নিজের প্রতিভা খুঁজে দেখো, খুঁজে বের করো নিজের কি করতে ভালো লাগে। নিজের যা করতে ভালো লাগে সেটার পিছনে আন্তরিকভাবে সময় দাও। কখনো লক্ষ্যচ্যুত হওয়া যাবে না। বিরতি নেওয়া যাবে কিন্তু হাল ছাড়া যাবে না। তবেই লক্ষ্যে পৌঁছানো এবং ব্যতিক্রমী কিছু করা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যে, প্রথমবর্ষ থেকে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং এর সাথে যেন যুক্ত থাকে। সেটাকে উপভোগ করতে হবে। প্রোগ্রাম সলভিং স্কিল খুব বড় ভূমিকা রাখে এধরনের টেক ইন্টারভিউগুলোতে।’

এদিকে মীর নশিন জাহানের গুগলে চাকরি পাওয়ায় আনন্দিত তার শিক্ষক, বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা শুভেচ্ছা বার্তা লিখছেন তারা। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলমও।

এক অভিনন্দন বার্তায় উপাচার্য বলেন, ‘মীর নশিন জাহানের এ গৌরবময় চাকরি লাভে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। এতে আইআইটির তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও পরিচিতির আরও প্রসার ঘটবে। আমি আশা করি কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভের মাধ্যমে মীর নশিন জাহান নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে পারবে।’

আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ানের নিউ তাইপেই শহরের গুগল কার্যালয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেব যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।

মীর নশিন জাহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সাভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক উচ্চ স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলোজিতে ভর্তি হন নশিন।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ