ক্যারিয়ার শব্দটি শুনলেই প্রথমে মাথায় আসে উচ্চ বেতনের একটি চাকরি। যার টাকা যতো বেশি, আমরা তাকে ততো সফল বলে মনে করি। তবে ক্যারিয়ার বলতে মূলত কর্মময় জীবনের একটি অংশকে বোঝায়। আরও সহজভাবে বলতে গেলে, ক্যারিয়ার মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যা সে নিজের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য পেশা হিসেবে ব্যয় করে। আমাদের জীবনে প্রায় অর্ধেক অংশ এই ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটতেই চলে যায়। এত বড় বিসজর্নেও সফলতা না আসলে সেই কষ্ট আজীবন মনের মধ্যে পুষে রাখতে হয়।
যুগ এখন প্রযুক্তির হাতে। দিনে দিনে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। একুশ শতকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে প্রয়োজন কৌশলী পরিশ্রমের। শুধু মেধা থাকলেই হবে না, মেধাকে শাণিত করতে হবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে। আর মেধা ঘষামাজার মোক্ষম একটি প্ল্যাটফর্ম ক্যারিয়ার ক্লাব। যদিও এটি অলাভজনক উদ্যোগ। তবে অলাভজনক মানেই যে একেবারে অকেজো তা কিন্তু নয়। এর মাধ্যমে আদর্শ ক্যারিয়ার গঠনে বিভিন্ন তথ্য, নেতৃত্বের গুণাবলী, দলবদ্ধ হয়ে কাজ করাসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ রয়েছে। যা পরবর্তী জীবনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। বিদেশে উচ্চশিক্ষাসহ বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রেও ক্লাবে কাজের অভিজ্ঞতা একধাপ এগিয়ে রাখবে।
পৃথিবীতে সবারই কোনো না কোনো বিষয়ে যোগ্যতা ও দক্ষতা রয়েছে। ক্লাবের সদস্যদের দক্ষতা ও যোগ্যতা একে-অপরের সাথে ভাগাভাগি করলে অন্যরাও বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। বলা হয়ে থাকে, তথ্যই শক্তি। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে না জানার কারণে অনেক সময় আমরা ব্যর্থ হই। তাই শিক্ষার্থীদের তথ্য সহায়তা দিয়ে যুগোপযোগী এবং আরও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে থাকে ক্যারিয়ার ক্লাব।
তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৪২ বছরেও এমন কোনো ক্লাব ছিল না। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল এমন একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা। দীর্ঘ দিনের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদরূপে গড়ে তুলতে যাত্রা শুরু করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব। ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর ‘ফার্স্ট ডিজার্ভ, দেন ডিজায়ার’ স্লোগানে যাত্রা শুরু করে ক্লাবটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই একঝাঁক মেধাবী তরুণের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে ক্লাবের কার্যক্রম।
দেখতে দেখতে দুই বছর পূর্ণ করে তৃতীয় বর্ষে পদার্পন করেছে ক্লাবটি। এ উপলক্ষে র্যালি কেট কাটা, আলোচনাসভা সহ নানা আয়োজন করেছে সংগঠনটি। সোমবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় সংগঠনটির সভাপতি ফারজানা ইসলাম মাহী ও সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন থেকে শুরু হয়ে একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে টিএসসিসির ১১৬ নং কক্ষে আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি ফারজানা ইসলাম মাহীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম। অতিথি ছিলেন ইবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সরকার মাসুম, ইবি ক্যারিয়ার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশিকুর রহমান, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মুরাদ।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেদওয়ানুল ইসলাম ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সামিহা চৌধুরী প্রিয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আশিফা ইসরাত জুঁইসহ সংগঠনের কার্যনির্বাহী ও অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মধ্যাহ্নভোজের পর দুপুর ২টার দিকে পাবলিক স্পিকিং ও সাংগঠনিক আচরণবিধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সংগঠনটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ