রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পঞ্চমবারের মতো দুইদিন ব্যাপী ‘চিহ্নমেলা’ শুরু হয়েছে। ‘চিহ্ন মেলা মুক্তবাঙলা-২০১১’ এর আয়োজন করেছে সাহিত্যে ছোট পত্রিকা চিহ্ন।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মু. শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবন চত্ত্বরে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন কলকাতার বিশিষ্ট লিটল ম্যাগ ব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত।

এর আগে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘চিহ্ন নামটি শুনেই আমার মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত গান ‘যখন পরবে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’ রবীন্দ্রনাথের এই চিহ্ন না পড়াটা নেগেটিভ সেন্সে তিনি বলেছেন। এখানে যে চিহ্নমেলা হচ্ছে সেটা পজিটিভ সেন্স থেকে। আমরা আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন, আমাদের সংগ্রামের চিহ্ন, আমাদের প্রতিবাদের চিহ্ন রেখে যেতে চাই।’

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘চিহ্নমেলার মাধ্যমে আমরা প্রাকৃতিক ভূগোলকে অতিক্রম করে ভাষার ভূগোলে এক হয়েছি। আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি তাদের জন্য এই চিহ্নমেলা একটা মহামহাসমূদ্রে পরিণত হয়েছে। এই মিলনমেলা আমাদের আগামীর দিশা দেখাবে।’

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, দুইদিন ব্যাপী এ মেলার প্রথম দিন আজ সোমবার ‘প্রয়াত-প্রিয়জন’ অনুষ্ঠানে প্রয়াত প্রতিথযশা লেখকদের স্মরণ করা হয়। প্রয়াত শঙ্খ ঘোষ, সৈয়দ শামসুল হক, দেবেশ রায়, আনিসুজ্জামান ও হাসান আজিজুল হকের স্মৃতিচারণ করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রামাণিক, ইমানুল হক এবং অমল সরকার।

এরপর ‘সৃষ্টিশীলতার সমাজতত্ত্ব ও লিটলম্যাগ’ নিয়ে একক বক্তৃতা দেন প্রাবন্ধিক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অনুবাদ প্রসঙ্গ নিয়ে কথাসাহিত্যিক মোজাফ্ফর হোসেনের সঞ্চালনায় কথা বলেন আলম খোরশেদ, শরীফ আতিক-উজ-জামান, সফিকুল ইসলাম, প্রত্যয় হামিদ ও মুহম্মদ মুহসীন।

দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশের ‘তৃতীয় চোখ’ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘নৌকো’কে ‘চিহ্ন লিটলম্যাগ সম্মাননা’ প্রদান করা হবে। ‘চিহ্ন সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করা হবে কথাসাহিত্যিক হামিদ কায়সারকে এবং কবি জুলফিকার মতিনকে ‘চিহ্ন সারস্বত সম্মননা’ প্রদান করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, কবি জুলফিকার মতিন, বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতান ও ‘চিহ্ন’ সম্পাদক অধ্যাপক শহীদ ইকবাল প্রমুখ।

নয়া শতাব্দী/জেআই