‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়' জীবনের এই কঠিন সত্যটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন অনেক আগেই। আসলে যেকোনো বিদায়ই কষ্টের। তেমনি এক মুহূর্তের সাক্ষী সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাবেক উপাচার্য ও আইকিউএসি-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভিন বানু ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সাইন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন মণ্ডলের বিদায়ে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আইকিউএসি কনফারেন্স রুমে ‘বিদায় সংবর্ধনা’ আয়োজিত হয়েছে।
বিদায় সংবর্ধনার শুরুতে বিদায়ী কর্মবীরদের বিভিন্ন স্মৃতিময় মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করে অ্যানিম্যাল প্রোডাকশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আব্দুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উনাদের অবদান অনেক। একজন নারী হয়েও প্রশাসনিক দায়িত্বের পাশাপশি ক্রীড়া কিংবা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে লায়লা ম্যামের নেতৃত্বই আজকে আমাদের অবস্থান তৈরি করেছেন। আর আমাদের ডিন স্যারের সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বেই ভেটেরিনারি কাউন্সিল কর্তৃক শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা হয়েছে।
ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম দেখলাম আমাদের প্রশাসন থেকে বিদায় সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়েছে। আজকে এই বিদায়ের মাধ্যমে আমরা হারাচ্ছি একজন নারী মুক্তিযোদ্ধাকে।
ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইন্সেস অনুষদের ডিন ও বিদায়ী অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন মণ্ডল বলেন, কাদম্বিনী যেমন মরিয়া প্রমাণ করলো সে মরে নাই, আমিও একইভাবে আজকেই নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছি। সবার কাছে দোয়া চাই। আর প্রতিষ্ঠানের উৎপত্তি সম্পর্কে আমাদের জানা জরুরি। এই প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে এর সাথে যারা জড়িত তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সাবেক উপাচার্য ও আইকিউএসি-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভিন বানু বলেন, নাড়ির টান থেকেই যায়। গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমার নাড়ি, এখন থেকে আসলে আমি যেমন বিদায় নিতে পারবো না, তেমনই আপনারাও বিদায় দিতে পারবেন না।
পূর্বের স্মৃতিচারণ করে রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ এস. তাসাদ্দেক আহমেদ বলেন, আমি সৌভাগ্যবান যে, আমি একজন নারী মুক্তিযোদ্ধার সাথে চাকরি করতে পেরেছি। উনার সাথে সমন্বয় করে মরা চেষ্টা করেছি গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ভেটেরিনারি অনুষদের অগ্রযাত্রায় ডিন হিসেবে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন একজন আদর্শ শিক্ষক ও সজ্জন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ডা. মো. মোতাহার হোসেন মণ্ডল। যেকোনো ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, কর্মজীবনের স্মৃতিচারণের লক্ষে আমি এই বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করি। আমরা দু’জন অভিবাবক হারালাম। সদ্য বিদায়ী স্পষ্টভাষী ডিন তার অনুষদকে এগিয়ে নিতে একজন সফল ব্যক্তিত্ব। উনি যেখানেই থাকুক না কেন, আমাদেরকে উনি অনুষদ সংক্রান্ত সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আর আমাদের সাবেক উপাচার্য আমাকে নানান বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ