প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্ট্রার ভবন) হয়রানি বন্ধের দাবিতে অনশনরত ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর অনশন ভাঙালেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য পানি খাইয়ে তার অনশন ভাঙান। এ সময় তিনি হাসনাতের ৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
উপাচার্য বলেন, আমি ঘোষণা দিচ্ছি, এই মুহূর্ত থেকে কোনো শিক্ষার্থীকে দাপ্তরিক কাজের জন্য আর রেজিস্ট্রার ভবনে যেতে হবে না। সব কাজ হল এবং বিভাগে সম্পন্ন হবে। সেখানে আমাদের লোকবল দেওয়া আছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোনো শিক্ষার্থী যেন রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে এসে মূল্যবান সময় নষ্ট না করে। সে সময়টিতে তারা যেন পড়াশোনা করে, সেমিনার রুমে আড্ডা দেয় এবং লাইব্রেরিতে যায়। কোনো কাজেই তারা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে আসবে না। সব কাজ হল এবং লাইব্রেরিতে সম্পাদন হবে। সেখানে কেউ হয়রানি হলে প্রভোস্ট এবং চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনশন ভাঙানোর পর হাসনাত আব্দুল্লাহকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার সহপাঠীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।
রেজিস্ট্রার ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার, হয়রানি বন্ধসহ সব কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার দাবিতে ৮ দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন হাসনাত। সারা রাত অবস্থানের পর সকালে তিনি জ্ঞান হারান। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে না খেয়ে শরীর খারাপ হতে থাকে তার।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সীমা ইসলাম, ড. মো. আব্দুল মুহিত, ড. সউদ আহমেদ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি রাজি হননি।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী তাকে দেখতে আসেন এবং উপাচার্য আসার আশ্বাস দেন।
এদিকে হাসনাতের আমরণ অনশনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে বুধবার সকাল ১১টার দিকে মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অনশন ভাঙানো এবং ৮ দফা মেনে নেওয়ার দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
হাসনাতের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম- প্রশাসনিক কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটালাইজড করা; শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন; সব অফিস কক্ষে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন; কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক-বিদ্যা; পেশাদারিত্ব; মানসিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতামূলক করা।
নয়া শতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ