সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ৫১ একরের ক্যাম্পাস। ভেটেরিনারি কলেজ থাকাকালীন নির্মিত অডিটোরিয়াম এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে নতুন একটি অডিটরিয়ামের কাজ চলমান থাকলেও ধীর গতিতে কাজ চলছে। বিকল্প না থাকায় পুরাতন অডিটোরিয়ামের সংস্কার কাজ শুরু করেছে সিকৃবি প্রশাসন। পুরাতন অডিটোরিয়াম সংস্কার করতে ৯০ লাখ টাকা বাজেট ধরা হলেও খরচ কমিয়ে ৩০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অনুষদীয় সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারেনি। সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা দ্রুত অডিটোরিয়ামটি মেরামত করে উন্মুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও অনুষদীয় ছাত্র সমিতির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, অডিটোরিয়াম না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সম্মেলন কক্ষে গাদাগাদি করে এবারের নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বে থাকা ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা সামসুজ্জামান বলেন, আমরাও চাই অডিটোরিয়ামের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করতে। এ জন্য একটি কমিটিও করা হয়েছে। তিনি বলেন, কমিটি কাজ শেষ করার ব্যাপারে বেশ তৎপর। আশা করছি, দ্রুততম সময়ে আবার এটি সচল হবে।
অডিটোরিয়ামের ইনচার্জ সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল আলম টিপু বলেন, অল্প কিছু কাজ বাকি আছে। সামনের সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি সভা রয়েছে। সভায় অডিটোরিয়ামের সংস্কার কাজের অগ্রগতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, কাজ এখন বন্ধ থাকলেও আবার দ্রুত শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, সিলেট বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা হওয়ায় এই কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অবশিষ্ট কাজ শেষ করে অল্প দিনের মধ্যেই সবার জন্য অডিটোরিয়াম উন্মুক্ত করতে পারবো বলে জানান তিনি।
অডিটোরিয়াম সংস্কার কমিটিতে থাকা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান বলেন, কাজটি দ্রুত শেষ করতে এ মাসের ২০ তারিখ একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। আমি দুদিন আগেও অডিটোরিয়াম পর্যবেক্ষণ করেছি, এখন আর আগের মতো ছাদ থেকে পানি পড়ছে না।
তিনি আরও বলেন, কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন ভেতরে চূড়ান্তভাবে রঙের কোটিং করা হবে। কন্ট্রাক্টরের কাজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে তিনি বলেন, কন্ট্রাক্টর বিল না পাওয়ায় কাজ আপাতত বন্ধ রেখেছে। তবে কাজ শুরু করলে শেষ হতে এক মাসও সময় লাগার কথা না।
অডিটোরিয়াম মেরামত বাবদ কত টাকা বাজেট রাখা হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ৯০ লাখ টাকা বাজেট ধরা হলেও আর্থিক স্বল্পতা বিবেচনায় অনেক কিছু কমিয়ে এখন প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার মধ্যে কাজটি সমাপ্ত করতে হচ্ছে।
অডিটোরিয়াম সংস্কার কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ হাসনাত বলেন, অডিটোরিয়ামের বয়স প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেছে। বর্ষার সময় এর ভেতরে প্রতিনিয়ত পানি প্রবেশ করায় এর সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমে প্লাস্টার করা হয়েছিল কিন্তু এরপরেও পানি প্রবেশ না থামায় রংয়ের কোটিং করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছাদের পানি পড়া সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিল পেমেন্ট করব না। কেবল সব কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই সমস্যার সমাধান হলেই কাজ শেষ সাপেক্ষে কণ্ট্রাক্টরের বিল পরিশোধ করা হবে। কাজ দেরি হওয়ার পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে সিলেটের প্রতিকূল পরিবেশকে দায়ি করেছেন। তিনি বলেন, কোটিং-এর কাজ আদ্র অবস্থায় করা যায় না। তবে এরই মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি বলেন, বাজেটের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ইন্টেরিয়র ডেকরেশন করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ