ভালো কাজের স্বীকৃতি কে না পেতে চায়। তাই বলে জোর করে? এমনই এক ঘটনা ঘটেছে সরকারি তিতুমীর কলেজে। কলেজটির সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো থেকে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সংবর্ধনা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। অতি উৎসাহী ছাত্রলীগে অনুপ্রেবশকারীরা এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে বলেও জানা গেছে৷
কথিত এই সংবর্ধনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের গায়ে হাত দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অভিযোগের তীর ছাত্রলীগের দিকেই। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ দেখা গেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
তারা বলছেন, ইচ্ছের বিরুদ্ধে সংবর্ধনা নেয়া লজ্জাজনক। যে সংবর্ধনা পাওয়ার সে এমনিই পাবে। তাকে এভাবে জোর করে নিতে হবে কেন? তাছাড়া সাংবাদিকদের ওপর এমন ছোট খাট হামলা প্রায়ই ঘটে। দুই একটা নিউজ হয়- এরপর সবাই চুপ। নিজ সংগঠনের কর্মী লাঞ্ছিত হওয়ার পরেও সাংবাদিক সমিতির চুপ থাকাও রহস্যজনক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারি তিতুমীর কলেজে ৪টি বাস দিয়েছেন নরসিংদির ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির মোল্লা। কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভাপতির বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় বাস উপহার পাওয়াকে ছাত্রলীগের সাফল্য হিসেবে দেখছে সংগঠনটি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজ সংগঠনের আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে আগে থেকেই বিতর্কিত কোনঠাসা সাবেক এক নেতা ছাত্রলীগের কাছে ভালো হতে এই সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। যিনি এই সংবর্ধনা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক। যেহেতু ছাত্রলীগকে এই সংবর্ধনা দেয়া হবে তাই সব সংগঠন এখন চুপ। এছাড়া তার ইচ্ছে রয়েছে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ারও। তাই তিনি নিজ উদ্যোগে এই সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন। সংবর্ধনা বিষয়ক যে কমিটি করা হয়েছে, সেখানে কলেজটিতে থাকা সব সংগঠনের প্রতিনিধিও রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, অন্যসব সংগঠনের নেতারা বিষয়টি মোটেই ভালোভাবে নেয়নি। নিজ সংগঠনকে কলেজটিতে টিকিয়ে রাখতে বিষয়টির সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। তবে ভেতরে ভেতরে অসন্তোষ দেখা গেছে। অন্যদিকে সংবর্ধনা বিষয়ক এই কমিটিতে সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নামও রয়েছে।
আবার সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাব্বি হোসেনের গায়েই হাত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রাব্বি বলেন, ‘আমি দাড়িয়ে ছিলাম- এমন সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি প্রতিবাদ করলে আবারো ধাক্কা দেয়।’
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য জানান, ছাত্রলীগ এর আগেও বেশ কয়েকবার হামলা করেছে। হামলার পর তারা ক্ষমা চেয়েই পার পেয়ে যাচ্ছে। তাই তারা বার বার একই কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কমিটিতে স্থান পাওয়া এক সদস্য জানান, বিষয়টি আমাদের মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তাছাড়া সংবর্ধনায় যে ফাণ্ড খরচ করা হবে তা আমাদের পকেটের। আর্থিকভাবে আমরা দুর্বল, কলেজ থেকে তেমন সহায়তাও পাই না। তারপরও এক হিসেবে বাধ্য হয়েই এই খাতে আমাদের খরচ করতে হচ্ছে।
তবে সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।’
তবে সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়ল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘চিনতে পারেনি, চিনলে গায়ে হাত দিতো না। দু:খিত।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ