ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কর্মসূচিতে অনড় সজল, ৩ দিন গেলেও সাড়া মেলেনি প্রশাসনের

প্রকাশনার সময়: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪০

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলার ঘটনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ওপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া ‘সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের’ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ও ‘কেড়ে নেয়া’ এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ক্যাফেটেরিয়া ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন হামলার শিকার নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সজল কুন্ডু। কর্মসূচির ৩ দিন গেলেও প্রশাসন থেকে তার সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

নিজের ৩ দফা দাবি ন্যায্য এবং যৌক্তিক বলে দাবি করে সজল বলেন, আমি আশা করি, আমার দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের দেয়া মামলা তুলে নেওয়া হবে এবং আমার রুটিরুজির শেষ সম্বল ক্যাফেটেরিয়া আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে দাবি বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সজলের দাবি, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক ও ন্যায্য আন্দোলনের অংশ হওয়া এবং আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে যাওয়ার কারণে তার কাছ থেকে ক্যাফেটেরিয়া কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সজল বলেন, একটা যৌক্তিক ও ন্যায্য আন্দোলনের হিস্সা হয়ে যাওয়ার কারণে এবং এ আন্দোলনের সাথে আমি জড়িত হয়ে যাওয়ার কারণে আমার প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ক্যাফেটেরিয়া কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

সজল বলেন, ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে যায় প্রশাসন। ঈদের পর পুনরায় চাবি চাইলে তাকে নতুন নীতিমালার কাগজ দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলে। তাদের কথা মতো আমি ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফর্ম, ডিনস সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্সসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আমাকে চাবি দিতে বললে অফিস থেকে আমাকে বলা হয়, স্যার আপনাকে চাবি দিতে নিষেধ করেছেন, নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে। দরপত্র আহ্বান বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরে যে পাবে তাকে (ক্যাফেটেরিয়া) দেওয়া হবে।

সজল কুন্ডু বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক একটা নিপীড়ক প্রশাসক, এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটা শোষক। প্রায় ৭ মাস আগে ১৬ জানুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে প্রহার করা হয়, গুলি করা হয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। তখন আমি মারাত্মকভাবে আহত হই। আমার শরীরে প্রায় ৮৩টির মতো স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করা হয়েছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে সে মামলাগুলো উঠানোর কথা ছিল। মামলাগুলো এখনো উঠানো হয় নাই।

সজল বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুটি দাবি তোলা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের যে প্রতিশ্রুতিগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয় নাই। উপরন্তু আন্দোলনের পূর্ব থেকে আমি যে আইআইসিটির ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে ছিলাম, আমার সেই রুটিরুজির জায়গা, শেষ সম্বল ক্যাফেটেরিয়াটাও এই প্রতিহিংসা পরায়ণ প্রশাসক আমার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে নিয়ে নিয়েছে। আমি গুলি খাইলাম, আমি মাইর খাইলাম, আমাকে যেখানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল, সেগুলো কোনোকিছু দেওয়া হলো না।

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষায় ফেরাতে শিক্ষামন্ত্রী ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতির মাধ্যমে ‘সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের’ আশ্বাসের পর প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও তোলা হয়নি দায়ের করা মামলা। এতে যেকোনো সময় মামলার কবলে পড়ার আশঙ্কা করছেন সজল কুন্ডু।

নয়া শতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ