বিচারহিনতার সংস্কৃতি দেশে যতদিন বিদ্যমান থাকবে ততদিন উৎপলের মতো শিক্ষকদের আত্মহুতি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শুভ্রা রানী চন্দ।
বুধবার (২৯ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকদের হত্যা, জমি দখল ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাকের জমি দখল, কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমারকে হত্যা ও কলেজ অধ্যক্ষ স্বপন কুমারকে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন বক্তারা।
শুভ্রা রানী বলেন, আশুলিয়ায় যে ছেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে সে তথাকথিত কোনো প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। এটাই তার প্রথম কাজ না এর আগেও সে নানা অপকর্ম করেছে। যার কোনো বিচার হয়নি। এই বিচারহিনতার সংস্কৃতি বাংলাদেশে যতদিন বিদ্যমান থাকবে ততদিন উৎপলের মতো শিক্ষকদের আত্মহুতি দিতে হবে তাছাড়া কোনো উপায় নাই।
তিনি আরো বলেন, যদি একটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত অপমানিত হতে থাকে। তাহলে সেই দেশ ও জাতির যতই উন্নতি হোক না কেনো দেশের মূল জায়গাটা নড়বড়ে থেকে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, সাম্প্রদায়িক চেহারা দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বিশেষ করে শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। যারা এই কাজ করছে তারা যে খুব ধার্মিক তা নয়। তারা এ কাজ করছে কারণ কোনো না কোনোভাবে এর সাথে সম্পদ জড়িয়ে আছে এবং সেটাকে সাম্প্রদায়িক চেহারা দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি, আপনি নিজে এ ব্যাপারটি একটু দেখুন। সন্ত্রাসীরা যেনো কোনো দলের আশ্রয় নিতে না পারে। কারণ সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, অধ্যাপক অরুণ কুমার সরকারের ঘটনাটি সমাজের সমন্বিত ব্যার্থতার উপসর্গ। আমাদের বস্তুগত উন্নয়ন হয়েছে মানবিক উন্নয়ন হয়নি। মানবিক উন্নয়ন ছাড়া সকল উন্নয়ন ব্যর্থ। অরুণ স্যারের সমস্যাটি দুই যুগ ধরে চলছে। তার সমস্যার সমসাধান হয়নি কারণ তিনি শিক্ষাবিদ, তার পেশি শক্তি নেই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, মাইক্রবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক অমিত কুমার দত্ত, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিলা খাতুন, রিদম শাহরিয়ার, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী নারায়ন চন্দ্র দাস প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ