বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার মূলে যে কারণ সমূহ রয়েছে তার মধ্যে পোস্টট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) অন্যতম একটি কারণ। আর এই মানসিক বিপর্যয় থেকে কীভাবে উত্তরণ সম্ভব তার প্রেক্ষিতে আজ সকাল ১১ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন।
পোস্টট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) হলো এক ধরনের মানসিক ব্যাধি যা এমন ব্যক্তিদের মধ্যে হতে পারে যারা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কোন গুরুতর দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে এবং যেখানে দেখা যাচ্ছে যে এর বড় একটা অংশই একটা পর্যায়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের চ্যাপ্টার কো-অর্ডিনেটর আফরোজা জাহান তাজিন বলেন, আজকের আমাদের ক্যাম্পেইন মূল উদ্দেশ্য ছিলো ইদানীংকালে আমরা লক্ষ্য করছি যে, পোস্টট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত অনেক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে। তাই আমরা তাদেরকে এ বিষয়ে সচেতনতার জন্যই আজকে আমাদের এ প্রচারণা। আত্মহননকারীদের মধ্যে যদি বড় একটা অংশ এই পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে না আক্রান্ত হতো তাহলে ১.৬ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা প্রতিরোধ করা যেতো। তাই আঁচল ফাউন্ডেশন সকলকে সচেতনার জন্য এ ধরনের ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে যাচ্ছে তারই অংশ হিসেবে আজকের আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম।
আঁচল ফাউন্ডেশনের ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক বিজন বাড়ৈ বলেন, এই পিটিএসডি সরাসরি আত্মহত্যার পিছনে দায়ি। তাই সকলেরই জানা উচিৎ- এ পিটিএসডি কি এবং কি কি কারণে এ পিটিএসডি পর্যায়ে যায়? তাই আমি বলবো- এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতনতার জন্য যা যা করা দরকার আমাদের তা করতে হবে। তার জন্য এ ধরনের ক্যাম্পেইন ও সেমিনারের আয়োজন করে সকলকে সচেতনতা করাতে হবে।
আঁচল ফাউন্ডেশনের এ ধরনের ক্যাম্পেইন সম্পর্কে প্রক্টর অধ্যাপক মোস্তফা কামাল বলেন, ক্যাম্পাসে আঁচল ফাউন্ডেশনের এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা সর্বদাই স্বাগত জানাই। তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বিষয়ে যে কোন ধরনের কাজ করতে চায় তাহলে তাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
আঁচল ফাউন্ডেশনের এ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমরা চাই না আর কোন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা মত সিদ্ধান্ত নিক। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে যেকোন সহযোগিতার জন্য আমরা কাউন্সিলিং সেন্টার করে দিয়েছি। আমরা চাই- সেখানে সকলেরই অংশগ্রহণ থাকবে। আঁচল ফাউন্ডেশন যদি আমাদের কাউন্সিলিং সেন্টারের সাথে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।
এছাড়াও ক্যাম্পেইনে আরো উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ