সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসাসহ নানা সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যায় সবকিছু হারিয়ে অনেকেই এখন অসহায়। পানিবন্দী মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তায় কিংবা নিরাপদ কোনো আশ্রয়স্থলে। এসব বানভাসি মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এর ব্যাতিক্রম নয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সুনামগঞ্জসহ আশেপাশে অঞ্চলের বানভাসিদের পাশে দাঁড়াতে সম্মিলিতভাবে অর্থ সংগ্রহ করছেন তারা। বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াই’ শিরোনামে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় অর্থ সংগ্রহের কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠন নির্ভয় ফাউন্ডেশন, উইম্যান পিস ক্যাফে, প্রথম আলো বন্ধুসভা, রংধনু, হাসিমুখ, অরণ্য, উইম্যান লিডার্স, ৭১’র চেতনা, ক্যারিয়ার ক্লাব, রিসার্চ সোসাইটি ও সাইক্লিস্ট ক্লাব, উদীচী শিল্প গোষ্ঠী, নবছায়সহ বিভিন্ন সংগঠন।
এ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নবছায়ার প্রতিষ্ঠাতা দেলোয়ার হোসেন রনি জানান, ‘আমরা আমাদের মানবিক জায়গা থেকে বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়ে টাকা উত্তলন করছি।এই অর্থ আমরা বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বিতরণ করবো।’
রংধনু-জাককানইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার রনি বলেন, ‘আমরা মানুষ, সামাজিক জীব, তাই সমাজ ও দেশের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ। দেশজুড়ে যখনই কোনো খারাপ সময়, মহামারী, প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ এসেছে তখনই এদেশের তরুণরা সকল ভেদাভেদ ভুলে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিনাস্বার্থে। আজও আমাদের দেশে এমনই এক কঠিন দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সকলেই শক্তহাতে যেখানে হাল ধরেছে সেখানে নজরুলিয়ানরাও পিছিয়ে নেই। আমরা সম্মিলিতভাবে ক্যাম্পাসের প্রায় ১১টি ক্রিয়াশীল সংগঠন বন্যা দুর্গতদের জন্য অনলাইন ও অফলাইনে ফান্ড সংগ্রহ করছি আরও ফান্ডিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আমরা ২৪ জুন ২০২২ রোজ শুক্রবার বন্যাপীড়িত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো আমাদের সাধ্যমতো, আপনাদের প্রতি অনুরোধ- আসুন, আমরা সবাই এই দুর্যোগে দুঃসময় মানুষের পাশে দাঁড়াই। এ ক্রান্তিলগ্নে বানভাসীদের বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেই।’
নির্ভয় ফাউন্ডেশন - সেন্ট্রাল ইউনিটের ইভেন্ট এন্ড লজিস্টিক ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন সাকিব বলেন, ‘হঠাৎ করেই সারাদেশে বন্যা নামক অতিমারির দেখা মেলে। শিশু বাচ্চা পানির নিচে তলিয়ে গেছে, খাবারহীন ৪র্থ দিন, আশ্রয়হীন মানুষের আহাজারি; এসব হেডলাইন যখন মাথা কুড়ে খাচ্ছিলো, তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন সমূহের সাথে জুড়ে দেই নির্ভয় ফাউন্ডেশনকে। আর নেমে পড়ি ত্রাণ সংগ্রহের কাজে। স্বেচ্ছায় ফান্ড প্রদানে উদ্ধুদ্ধ করি। সৃষ্টির সেরা বলেই সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত মানুষ সমূহকে সাথে নিয়ে অনেকদূর যেতে চাই।’
এছাড়াও ‘বন্যার্তদের জন্য গান, গানে বাঁচুক প্রাণ’ স্লোগানে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে গানে গানে নাট্যকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী তহবিল সংগ্রহ করছেন ময়মনসিংহের জয়নুল আবেদীন পার্ক, রেলওয়ে স্টেশনাসহ বিভিন্ন জায়গায়।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ