মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২২ এ স্মৃতিসৌধে হাতাহাতির ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট। বুধবার (১৩ এপ্রিল) এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষক নেতারা।
পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. কাজী আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ইবির ১০১ জন শিক্ষকের ২০১৪ সালের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে নবগঠিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ নামে শিক্ষক ইউনিট গঠিত হয়। ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের দুটি অংশ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় প্রথমবারের মত একটি পক্ষের বাঁধার সম্মুখীন হয়।
পরবর্তীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আগেই বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উপাচার্যের অফিসে যোগাযোগ করেন এবং জাতীয় দিবসের ভাবগাম্ভীর্য নিশ্চিতের অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে দিবসটির উদযাপন উপ-কমিটির আহবায়ক ও ছাত্র উপদেষ্টার সাথেও কথা হয় এবং তিনি নিশ্চিত করেন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট ২০ ক্রমিক নম্বরে আছে।
সেই মোতাবেক আমরা স্মৃতিসৌধে অপেক্ষা করতে থাকি। অপেক্ষারত থাকা অবস্থায় কমিটির আহবায়ক আমাদের জানান তার অনুমতি ছাড়াই একজন প্রশাসনিক পদাধিকারী শিক্ষক শ্রদ্ধাঞ্জলির তালিকা হতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের নাম কেটে দিয়েছেন এবং আহবায়ক তাৎক্ষণিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে জানান। কোন সমাধান না পেয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি আবারও মোবাইলে আপনার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরবর্তীতে আমরা স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় প্রশাসনিক পদাধিকারী কয়েকজন শিক্ষক বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের ফুলের ডালি ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের নেতৃবৃন্দকে লাঞ্ছিত করেন।
স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানালেও তিনি সাড়া দেননি। এ ধরনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমন ধরনের ঘটনা রোধকল্পে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শান্তি নিশ্চিত করতে আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে দুই গ্রুপের অন্তত ৩০ জন শিক্ষক জড়িয়ে পরেন। পরে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রের এক বিবৃতিতে ঘোষিত বর্তমান প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিনের নেতৃত্বে কমিটিকে বৈধ কমিটি বলা হয়।
এদিকে গত ২ এপ্রিল কেন্দ্র ঘোষিত পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে আদর্শচ্যুত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন। একইসাথে বঙ্গবন্ধু পরিষদ নাম ব্যবহার করে অন্য কোন সংগঠন গড়ে তুলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির করছে অভিযোগ করে তাদের থেকে দূরে সরে যেতে আহ্বান জানান।
নয়া শতাব্দী/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ