পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দুই বছর পর আবারো জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯। এ উপলক্ষে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য হবে ‘প্রকৃতি’। পাশাপাশি থাকবে পাখি, ফুল ও বিভিন্ন বস্তুর ভাস্কর্য।
এ উপলক্ষে নববর্ষের প্রথম দিনটিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আয়োজনকে ঘীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে ও চারুকলা বিভাগে চলছে পাখি, ফুল ও বিভিন্ন বস্তুর মুখোস ও ভাস্কর্য তৈরির কাজ। বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনে থাকছে মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জানা যায়, এবার পহেলা বৈশাখে সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে৷ রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে ঘুরে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসে এসে শেষ হবে। এদিন বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ ‘মুজিবমঞ্চে’ নানান সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে।
আয়োজন সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি আসফিকুর রহমান বলেন ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলা ভূখণ্ডের সব মানুষের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের এ ঐতিহ্য মাটি ও মানুষের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এখানে কোনো জাতিভেদ ও ধর্মভেদ নেই। বাঙালির আদি সাংস্কৃতিক পরিচয় বহনকারী এ অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে আমাদের বিশেষ প্রেরণা জুগিয়েছে। এ ভূখণ্ডের বাঙালির বৈশাখের সংস্কৃতি আমাদের জীবন-সাহিত্য ও বাঙালি জীবনে জড়িয়ে পড়ে ওতপ্রোতভাবে। নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক অনন্য বৈশিষ্ট্য মিলে নববর্ষ উৎসব এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব, প্রাণবন্ত এক মিলনমেলা। ঐক্যবদ্ধ করেছে এ সাংস্কৃতিক-উৎসব ও চেতনা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকেই যাত্রা শুরু হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পহেলা বৈশাখের আয়োজন।
চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বজলুর রশীদ খান বলেন, দুই বছর পর আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে নববর্ষের উদযাপন করতে পারছি এজন্য আমরা আনন্দিত। এবারের আয়োজনে আমাদের মুল থিম প্রকৃতি, এজন্য আমরা পাখি আর ফুলের অবয়ব তৈরি করছি। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া আমরা বিভিন্ন ধরনের মুখোস তৈরি করছি যেগুলো মঙ্গল শোভাযাত্রায় উপস্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, জবিতে প্রতিবছর বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ব্যানারে অংশ নেয় তবে করোনা মহামারির কারণে পর পর দুই বছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা সম্ভব হয়নি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ