ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘২৫ মার্চ গণহত্যার জন্য পাকিস্তানিদের ক্ষমা চাইতে হবে’

প্রকাশনার সময়: ২৬ মার্চ ২০২২, ১৮:০৮

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে) দু’দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। প্রথম দিন শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী তানজীরের পরিকল্পনা ও পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে পারফরমেন্স আর্ট ‘আস্থা’।

এসময় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর দে বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে আমরা এটিকে জাতীয়ভাবে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছি। একাত্তরের ২৫ মার্চ কাল রাত্রিতে ঘুমন্ত, নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বর হামলার জন্য তাদেরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা পাকিস্তানীদের কাছে বলতে চাই, আপনারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন, দু:খ প্রকাশ করুন।’

এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চির উন্নত মম শির ও বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। আটটায় গাহি সাম্যের গান মঞ্চে প্রদর্শিত হয় সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমা ‘লাল মোরগের ঝুটি’। এছাড়া জাতীয় কর্মসূচীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রাত ৯টায় গোটা ক্যাম্পাসে ১ মিনিটের ব্লাক আউট কর্মসূচী পালন করা হয়।

শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে পতাকা উত্তোলন করা হয়, এরপর সেখান থেকে শোভাযাত্রাসহকারে গিয়ে চির উন্নত মম শির ও বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরে শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড১১-১৬), কর্মচারী ইউনিয়ন (গ্রেড ১৭-২০), হল কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলসহ অন্যান্যরা পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। অতঃপর সেখানে পায়রা অবমুক্ত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দুপুর ১২টায় গাহি সাম্যের গান মঞ্চে শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন মানে বাংলাদেশের জীবন। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস মানে বাংলাদেশের ইতিহাস। বাংলাদেশের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস আসবে।

আলোচনায় মুখ্য আলোচক হিসেবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুই মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার প্রস্তাবক। ১৯৪৭ সালের ৬/৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বাড়িতে যুব সম্মেলনে ভাষা আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।’

এছাড়া তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কৃতির প্রধান বাহন ভাষা। সংস্কৃতিবিহীন জাতি মুক ও বধির সম। তাই আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক রাগীব রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. জালাল উদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সুজন আলী, বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. সেলিম আল মামুন, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মো. জোবায়ের হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রামিম আল করিম, কর্মচারী সমিতি (১১-১৬ গ্রেড) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, কর্মচারী ইউনিয়নের (১৭-২০ গ্রেড) সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবসহ অন্যান্যরা। এরপর দুপুর ২ টায় বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধের গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ