জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ( নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও ৭ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ ও হলের আসন বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (৭ মার্চ) বিকাল তিনটায় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল হক হিমেল, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নাঈম আব্দুল্লাহ (যাযাবর নাঈম), লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মোমেন সরকার, একই বিভাগের তানভির আহমেদ তুহিনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হয়েছে। সাথে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব আগামী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে। সেইসাথে তাদের স্ব-স্ব হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই চারজনের সকলেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবের অনুসারী।
এছাড়াও বাকি ৭ জনকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ ও হলের আসন বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের আবু সোলায়মান নাঈম এর বিষয়ে সতর্কীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে।সেইসাথে তার হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পাশাপাশি সারজীল হাসান (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগ), মো. পলাশ (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), জোবায়ের আহমেদ সাব্বির (ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স সায়েন্স বিভাগ) এই তিনজন শিক্ষার্থীকে সতর্কীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে।
মো. ছনিক মিয়া (হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ), মো. মোজাহিদ হোসেন সজিব (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ), মো. সৌরভ হোসেন (পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ) এই তিনজন শিক্ষার্থীর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নং কক্ষের বরাদ্দকৃত আসন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপারিশপত্রে আরো বলা হয়, উপরোক্ত সব শিক্ষার্থীর নামে পত্র ইস্যু করা হবে এবং সেই পত্রের কপি সরাসরি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তাদের অভিভাবকের স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করার সুপারিশ করা হবে।
এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে এরূপ কার্যকলাপে যুক্ত হলে এবং গৃহীত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোন বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
সভা শেষে উপাচার্য বলেন, তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে নিরপেক্ষতার সাথে সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা কোনো দল বিবেচনা করিনি, আমরা ন্যায়বিচারের প্রশ্নে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আইনত তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। সকল সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিহাদকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের গ্রুপের রাজনীতি না করায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তোলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে ১৫ জন মিলে ঘটায় এ ঘটনা।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ