ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘গো বাংলাদেশ’ অ্যাপ গণপরিবহনে ভোগান্তি কমাবে

প্রকাশনার সময়: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:২৮ | আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৯

দেশের পরিবহন খাতকে আধুনিকায়ন করতে ‘গো বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা হলেন- মো. মেহেদী হাসান সৌরভ, জাহিদুর রহমান, রেজাউল করিম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও নিশাত মাহমুদ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা জানায়, একটি দেশের অগ্রগতি নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো এর পরিবহন কাঠামো। দেশের প্রায় সকল সেক্টরেই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগলেও পরিবহন খাত এখনো অবহেলিত, টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ও কাগজের টিকিটই গণ-পরিবহন সিস্টেম। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাস (১.৫ মিলিয়ন), লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভার (৭৭%), ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন (৮৭%), অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও ভাড়া নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা। গণপরিবহনে ঘটা আরেকটি উদ্বেগজনক অপরাধ হচ্ছে নারীদের যৌন হয়রানি (৯৪%)। তাছাড়াও অনিবন্ধিত বাস ও ড্রাইভার এই সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবে না।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানায়, বাসের প্রতিটি সিটের পেছনে একটি করে কিউআর কোড লাগানো থাকবে, যাত্রী যে সিটে বসে আছে তার সামনের সিটের পিছনে সেই সিটের কিউআর কোডটি থাকবে। যাত্রীরা তার সামনের কিউআর কোডটি স্ক্যান করার মাধ্যমে শুধুমাত্র গন্তব্য সিলেক্ট করে ভাড়া দিয়ে দিতে পারবে। তার জন্য ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে টাকা কেটে নিবে।

এছাড়া এ প্রজেক্টটির দ্বারা ভবিষ্যৎ ভ্রমণের জন্য অগ্রীম টিকিটও বুক করে রাখতে পারবে। ভ্রমণের বিপরীতে কোন মন্তব্য বা অভিযোগ থাকলে যাত্রীরা তা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রদান করতে পারবে ও সেবার মান সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারবে। যা সরাসরি পরিবহন মালিকরা দেখতে পারবে। এর দ্বারা বৈধ ড্রাইভার ও হেল্পারের জন্য যাত্রী ব্যবস্থাপনাও সহজ হবে এবং কোন যাত্রী ডিজিটালি ভাড়া দিতে না পারলে ক্যাশ টাকার মাধ্যমেও ভাড়া নিতে পারবে।

যাত্রীরা তাদের ভাড়া বিকাশ, নগদ, রকেট বা কার্ডের মাধ্যমের ভাড়া প্রদান করতে পারবেন। যাত্রীদের এ পেমেন্ট করা ভাড়া সরাসরি পরিবহন মালিকের মার্চেন্ট একাউন্টে যোগ হবে এবং টাকার মাধ্যমে নেওয়া ভাড়া ড্রাইভার মালিককে প্রদান করবে। এছাড়াও তিনি যেকোন সময় বাসের অবস্থান, ড্রাইভারের বিস্তারিত, যাত্রীর তথ্য এবং যাত্রীদের অভিযোগগুলোও দেখতে পারবেন।

জানা যায়, এই প্রকল্পটি মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মুজিব ১০০ আইডিয়া’ প্রতিযোগিতা-২০২১ এ সেরা ৩০ তম স্থান করে নিয়েছে। প্রকল্পটি মোবাইল এপ্লিকেশন ভিত্তিক একটি আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা, যা বর্তমান সিস্টেমের বিকল্প, নির্ভুল, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী। কিউআর কোড, ডিজিটাল ওয়ালেট, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করে এপ্লিকেশনটির মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন শ্রমিক ও পরিবহন মালিকদের একই ছায়াতলে নিয়ে আসতে সক্ষম হবে প্রকল্পটি।

এছাড়া সিটি ইউনিভার্সিটি আয়োজিত সিএসসি ফেস্টিভ্যাল-২০২১’ এ ‘আইডিয়া, ইনোভেশন অ্যান্ড ইনভেনশন’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। প্রস্তাবিত পদ্ধতিটি বাস্তবায়নের জন্য সম্প্রতি ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনারশিপ একাডেমি’ (আইডিইএ) হতে ১০ লক্ষ টাকার ফান্ড পেয়েছে এই প্রকল্পটি। “হিমাচল পরিবহন” সিস্টেমটি ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ধারণা তাদের এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের পরিবহন খাতকে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের এরুপ সৃষ্টিশীল কাজের জন্য তাদের অভিবাদন জানাই। শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সৃষ্টিশীল কাজের পাশে আমরা সব সময় তাদের সাথে আছি। তরুণদের এমন উদ্ভাবনী কাজের সহায়তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় আছে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ