ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
দেড় বছরেও চালু হয়নি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হল

হল চালুতে টালবাহানা

প্রকাশনার সময়: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:৪০ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৪৫

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল নামে ১০ তলা বিশষ্ট দুটি হল দেড় বছর ধরে উদ্বোধন ও চালুর অপেক্ষায়। তথ্যমতে, নতুন হল দুটিতে প্রায় ২৫০০ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাবে। ইতিমধ্যে হল কর্তৃপক্ষ হলে উঠার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ভাইভা নিলেও হল চালুতে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

২০২০ সালের ৫ই জুন ক্যাম্পাস টাইমসের সাথে ফেসবুক লাইভ সাক্ষাৎকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এ.এইচ.এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেছিলেন ”হলের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবে।” তার এই বিবৃতির দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উদ্বোধন হয়নি হল দুটি।

প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না ডলি বলেন,"আমরা যারা মেসে থাকি তারা কতটা নিরাপদ? ইদানিং মেসগুলোতে চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে।আমাদের মেসটা চরপাড়ার দিকে।গত পরশু আমাদের সাথেও একটি তিক্ত ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে আমাদের মেসের সিড়ির পাশের দেয়াল ভেঙ্গে চোর মেসে ঢুকে সবার রুমে নক করে। চোরের নেওয়ার মত ওইখানে অনেক কিছুই ছিলো কিন্তু চোর কিছুই নেয় নি। এই জন্যই সবাই ভয় পাচ্ছে তাহলে তার উদ্দেশ্য টাকি ছিল। অবশ্যই অন্য উদ্দেশ্যে নিয়ে মেয়েদের রুমে নক করেছিল।কাল রাতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সবাই রুমে নক করার শব্দ পেয়েছে। জানালা দিয়েও নক করে।আমাদের মনে হচ্ছে ওয়াল ভেঙে চোর একা আসেনি। চোর মেইন গেইটের তালা ভেঙে বের হয়েছে। তাদের কাছে ধারালো কিছু অবশ্যই ছিল।পরপর দুদিন একই ঘটনা ঘটায় আমরা মেসের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং প্রশাসনের কাছে আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাচ্ছি। সকালে মেসের চুরির ঘটনায় প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। সেইসাথে নিরাপত্তার কথা ভেবে টালবাহানা না করে হলগুলো খুলে দেয়ার জোরালো দাবি জানাচ্ছি। ”

আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মোরসালীন রহমান শিখড় আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,"বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বুদ্ধিবৃত্তিক ফুটবল ভেন্যু হচ্ছে জাককানইবি।দীর্ঘমেয়াদি প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দুইটি হলের একটিতেও গ্যাস নেই।এই উসিলা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে উঠানোতে কালক্ষেপণ করাটা শিক্ষার্থীদের সাথে একপ্রকার ডিপ্লোমেসি করার সমান! প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ফুটবল বানিয়ে খেলতেছে। যুগ পার হয়ে যাচ্ছে এই মাঠের খেলাতে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে হল দেখছি। আজ চারবছর হতে চললো, আমি বা আমাদের অনেকেই আদুভাই হলেও এই হলে উঠতে পারব কি না সন্দেহ আছে।”

হাফসা আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভয়ে রাতে ঘুমানো যায় না। প্রয়োজনে আমরা বাইরে থেকে খেয়ে নেব।হল দুটিকে শো-পিচ না করে আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দ্রুত খুলে দিন।"

লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা রাজি থাকলে ক্যান্টিন সুবিধা ব্যতীত নবনির্মিত দুটি হলেই শিক্ষার্থী ওঠানো উচিত। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে দ্রুত গ্যাস সরবারাহের দাবি জানাচ্ছি।"

এ প্রসঙ্গে নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর দে বলেন ‘নতুন দুটো হলের একটিতেও গ্যাসলাইন নেই। কাঠবা গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে ২৫০০/৩০০০ হাজার শিক্ষার্থীর ৩ বেলা খাবার রান্না করা অসম্ভব। গ্যাস লাইনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। গ্যাস লাইনের ব্যবস্থা করার পরই হল দুটি চালু করা হবে।”

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ