লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে, একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে, যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ভাবনায় বিজয়ের পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশকে যেমন দেখছে..
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি প্রথমে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ,যাঁর যোগ্য আর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে লাখ জনতা তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে জীবন দিবন দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনি। সে সঙ্গে জাতির সকল শ্রেষ্ঠ আর সূর্য সন্তানদের যাদের আত্মত্যাগ অর্জিত স্বপ্নের সোনার বাংলা যা গুটি গুটি পায়ে ৫০ বছরের বাংলাদেশে আজও স্বরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছে। স্বাধীনতার মহান সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি সত্যি একজন গর্বিত বাঙালি।
আমি স্বাধীনতা পূর্ব এবং তার পরবর্তী বাংলাদেশকে দেখি তার উন্নয়ন আর প্রশাসনিক কাঠামো কেমন ছিল? বর্তমান ২১ শতকের বাংলাদেশকে দেখে আমি আনন্দিত যা আজ উন্নয়নের মডেল হিসাবে বিশ্বকে অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে সুমহান মর্যাদায় ভূষিত হয়েছে। উন্নয়নের মডেল, শিক্ষা, প্রযুক্তি, চিকিৎসা, যোগাযোগ আর মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে আজ বাংলাদেশ সার্থক। এক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুযোগ্য নেতৃত্বে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে আপনার-আমার গৌরবের এই মাতৃভূমি যা ৩০ লাখ মানুষের জীবন দান এবং ১০ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের মর্যাদা এবং তাদের সেই ত্যাগের আশা আর স্বপ্ন পূরণ করছে যা তরুণ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। সকল বাঙালী আর বাংলাদেশ আজ ধন্য তাদের লক্ষ্য আর উদ্দেশ্য বাস্তবে উপলব্ধি করে।
-সিরাজুল ইসলাম
ডিসেম্বর মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বীরত্বগাঁথা বিজয়ের কথা। এবার সেই মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী তথা ৫০ বছর উদযাপন করছি আমরা। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মান ছিল স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়। পাশাপাশি দেশের প্রভূত অবকাঠামোগত উন্নয়নও লক্ষণীয়। তবে, বড় আক্ষেপের সাথে বলতে হয়, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও এদেশে নিশ্চিত হয়নি নারীর সম্মান। অসংখ্য মা-বেনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার লক্ষ্য ততদিন পূরণ হবেনা, যতদিন বাংলার আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হবে ধর্ষিতা বোনের আর্তচিৎকার আর ধর্ষকের অট্টহাসি। যতদিন এদেশে নারী নিপীড়ন বন্ধ না হবে ততদিন পর্যন্ত শান্তি পাবেনা একাত্তরের বীর শহীদদের আত্মা। তাই প্রত্যাশা করি, মহান স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে এদেশের মা-বোনের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত হবে। তবেই শান্তি পাবে শহীদের আত্মা, শান্তি পাবে বীরাঙ্গনা মায়ের আত্মা।
-মিনহাজুল ইসলাম।
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে, ৫০ বছরের আগের বাংলাদেশের চেহারা আর বর্তমান বাংলাদেশ একবার করে চোখের সামনে ভেসে ওঠে৷ এই সময়ে বাংলাদেশের কতটুকু অর্জন আর কতটুকু হওয়া উচিত ছিলো তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে তরুণ সমাজের একজন হিসেবে আমার প্রত্যাশা, বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একত্র করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন, তেমনি বাংলাদেশের সকলে সকল ভেদাভেদ, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে দেশকে উন্নত সারির দেশের কাতারে নিয়ে যেতে একসাথে কাজ করবে। তাহলেই হয়তো মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের মর্যাদা দেওয়া হবে। তাদের সেই আত্মত্যাগের আদর্শ নিয়ে সকলে এগোলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্বের বুকে শান্তিময় একটা দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাহলেই হয়তো আমাদের স্বাধীন দেশ হওয়া সার্থক হবে এবং বিজয়ের আনন্দ শতভাগ উপভোগ করতে পারবো।
-তাহসীনা সিফা শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ