আজ ৯ ডিসেম্বর, রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর জন্ম রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। বাঙালী নারীদের শিক্ষা, আত্মমর্যাদা উন্নয়ন ছিলো যার ধ্যান-জ্ঞান।
মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়া রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় নারীর সমান অধিকারের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন। রোকেয়া তাঁর লেখনীর মাধ্যমে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সমাজের কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন।
বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পণপ্রথা, ধর্মের অপব্যাখ্যাসহ নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন। মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে নারীকে গৃহকোণে আবদ্ধ রাখার ধ্যান-ধারণা পাল্টাতে তিনি ছিলেন সদা সোচ্চার। তার দেখানো পথ ধরেই নারীমুক্তি আন্দোলন চলছে। তার স্বপ্ন লিখে গেছেন মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনীর মতো কালজয়ী গ্রন্থে।
তাঁর এ অসামান্য অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০০৯ সালে রোকেয়ার জন্মভূমি রংপুরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম কোন নারীর নামে একটি পূর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করেন। কিন্তু নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপীঠে অবহেলিত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
বিগত বছরগুলোর মতো এবারেও দায়সারাভাবে দিবসটি পালন করছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তেরো বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই বেগম রোকেয়ার স্থায়ী প্রতিকৃতি বা ম্যুরাল।
বেগম রোকেয়া সম্পর্কে বিশদভাবে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অনুমোদিত সকল বিভাগের জন্য বাধ্যতামূলক “রোকেয়া স্ট্যাডিস” কোর্সের অনুমোদন থাকলেও নেই এর বাস্তবায়ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনার সাথে কথা বললে জানান, রোকেয়া স্ট্যাডিস কোর্সের সিলেবাস প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও এর বাস্তবায়ন না হওয়ায় তিনিও হতাশা ব্যক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবী খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেগম রোকেয়ার স্থায়ী প্রতিকৃতি নির্মাণ ও বেগম রোকেয়াকে বিশদভাবে জানার জন্য রোকেয়া স্ট্যাডিস কোর্সের বাস্তবায়ন হোক।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ