জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে চাকুরী স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়ায় আটকে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দ্রুত চাকুরী স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো প্রাথমিক বাছাইপর্ব শেষ করতে পারেনি। এদিকে অনেক কর্মচারির বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকালিন বয়স শেষ হওয়ায় আবেদন বঞ্চিত হয়েছেন। উপাচার্যের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কর্মচারিদের।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি মিলিয়ে মোট ২৪৭ জন দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে এমএলএস ৯৭ জন ও সিকুরিটি গার্ড রয়েছেন ২২ জন। গত ৮ মার্চ আভ্যন্তরীণ প্রার্থীর অনর্জনযোগ্য যোগ্যতার জন্য শর্ত শিথিল করে ৩৬ জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেন সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে সকল পদের জন্য বয়স সর্বোচ্চ বয়স সীমা ৩২ বছর চাওয়া হয়। কোনো পদের জন্য যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে তদস্থলে অন্য পদের নিয়োগ প্রার্থীকে নিয়োগ করার শর্ত দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত যোগ্যতা অনুযায়ী দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মরত ২৪৭ জনের মধ্যে মাত্র ৩৯ জন আবেদন করতে পেরেছেন। বাকিরা শর্তের গ্যাড়াকলে আবেদন করতে পারেনি।
কর্মচারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে সবারই চাকুরির বয়স ছিলো। কিন্তু এতদিনে চাকুরি স্থায়ীকরণের বিজ্ঞপ্তি না দেয়ায় তাদের বয়স শেষ হয়ে গিয়েছে। সার্কুলারে ৮ম শ্রেণী পাসের কোনো শর্ত দেয়া নাই। কিন্তু আবেদন নেয়ার সময় ৮ম শ্রেণী পাস ছাড়া নিচ্ছে না। সার্কুলারের শর্ত অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অর্জনযোগ্য যোগ্যতার শর্ত শিথিলযোগ্য বলা হলেও আবেদন গ্রহনের সময় অভ্যন্তরীণ কর্মরত কারো জন্য শর্ত শিথিল করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে এই কর্মচারীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক যারা কাজ করেন তাদের স্থায়ী নিয়োগের বিষয়ে আমরা উপাচার্য স্যার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, বর্তমান শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে মানবিক দিক বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আসলে যারা দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে তাদের বয়স শেষ হয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে মানবিক দিক বিবেচনার জন্য ভিসি স্যার বরাবর আবেদনপত্র দিয়ে রেখেছি। রেজিস্ট্রার স্যার অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে এখনও কোন ফিডব্যাক পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের সাবেক ডীন ও যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান ড. চঞ্চল কুমার বোস বলেন, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারীদের স্থায়ী করার জন্য আমরা একটা মিটিং করেছিলাম কিন্তু মিটিং-এ কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন নতুন ডিন এসেছেন। এই কমিটি আরও মিটিং করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আইন অনুযায়ী যাদের আবেদন যোগ্যতা আছে তারা আবেদন করতে পেরেছে। নিয়োগের বিষয়টি প্রসেসিংয়ে আছে শীঘ্রই হয়ে যাবে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ