ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যখন উদ্যোক্তা

প্রকাশনার সময়: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৬

নিজেদের বহু দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ছাত্র অবস্থায় একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি বেকারত্বরোধে কর্মসংস্থানও তৈরী করে। যখন অন্য একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সরকারী চাকুরির জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখে তখন উদ্যোক্তা হিসেবে সে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলছে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কিছু উদ্যোক্তার গল্প তুলে ধরছি যাদের গল্প তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

স্বপ্ন একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার

আল আমিন শাওন, পড়ালেখা করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন এবং অনুজীব বিভাগে। কাজ করে ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট, এডেনিয়াম, ওবেসাম, এরাবিকাম, হাওর্থিয়া, ক্যালাডিয়াম, ক্যালাথিয়া (এক ধরণের কাটা জাতীয় গাছ) বনসাইসহ বিভিন্ন ইন্ডোর প্লান্ট নিয়ে। থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, ইন্ডিয়া সহ আরো অনেক দেশ থেকে ইম্পোর্ট করে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়।

শাওন গত ৪-৫ বছর এই ক্যাকটাস জাতীয় গাছ নিয়ে কাজ করছে এবং গত ১৫ জানুয়ারি ২০২১ সালে নিজের অফিসিয়াল 'Maishan Cactuhub' নাম নিয়ে কাজ শুরু করে। নিজের টিউশনি এবং হাত খরচের টাকা দিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করে। অপরিচিত কাটা জাতীয় গাছ নিয়ে কাজ করায় প্রথমে অনেকে তাচ্ছিল্য এবং পাগলও বলেছিল কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তারাই আবার প্রশংসা করছে। শাওনের ইচ্ছে নিজের অর্জিত জ্ঞান আর একাডেমিক শিক্ষার সমন্বয়ে নতুন কিছু করার। গবেষণার মাধ্যমে এই খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছাও পোষণ করেন।

সফল নারী উদ্যোক্তা

আনজিলা মাহবুবের ছোট উদ্যোগের নাম ‘হিজিবিজি’। হ্যান্ডপেইন্টেড সবধরনের পোশাক, দেশীয় শাড়ি, গয়না, ডিজাইনার ব্লাউজসহ আরো নানারকম প্রয়োজনীয় শখের জিনিস নিয়ে কাজ করেন। পড়ালেখা করেন নোবিপ্রবি ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের ৩য় বর্ষে। পড়ালেখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজে কিছু করার তাগিদ অনুভব করতেন।

এই অনুপ্রেরণা থেকেই মায়ের দেওয়া কিছু টাকা দিয়ে নিজের বোনকে সাথে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা, শিক্ষকদের উৎসাহ এবং নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য রীতিমতো কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু করলেও করোনার মাঝেই মূলত নিজের 'হিজিবিজি' প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যান। একজন নারী হয়েও নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে আনজিলা মাহবুব।

সফলতার প্রথম শর্ত ইচ্ছাশক্তি

করোনায় লকডাউনে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোযুক্ত জার্সি, টি-শার্ট, হুডি, ট্র্যাকস্যুট নিয়ে কাজ শুরু করেন নোবিপ্রবি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহবাজ আহমেদ। নিজের বুটেক্সের বড় ভাইকে নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করেন। এখন নিজের overlay নামক ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে কাজ করেন। বিক্রির পরিমাণও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গতবছর শুধুমাত্র শীতকালীন সিজনেই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫ লাখ টাকার উপরে। শাহবাজ আহমেদ বলেন, একদম শুরুর অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য ভয়ংকর। সময় ও পরিশ্রমের ফলে আজ আমি এখানে আসতে সক্ষম হয়েছি। প্রথম একটি বছর ছিল আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কষ্টসাধ্য। যার ফলাফল এখন পাচ্ছি। প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং আল্লাহর সাহায্য আমাকে এখানে আসতে সাহায্য করেছে

লেখক : নাহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী, নোবিপ্রবি

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ