‘মুক্তিযুদ্ধে মীর আব্দুল কাইয়ূম জ্ঞানত অবধারিত মৃত্যুকে অবজ্ঞা করে, অকৃপণ মনকে প্রসারিত করে মুক্তিযুদ্ধের কর্মধারায় যোগ দিয়েছিলেন। তিঁনি ছিলেন এক মানবতার প্রতীক। শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের দেশের প্রতি কর্তব্যের টানে আত্মবিসর্জনের মহান অবদান জাতীয় পুরস্কারের দাবি রাখে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী মীর আব্দুল কাইয়ুম এর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমেরিটাস অরুণ কুমার বসাক এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সব শিশু জন্মগ্রহণ করেই কাঁদে, এটাই স্বাভাবিক। শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম জন্মেছিলেন বিশেষ এক ব্রত নিয়ে, মানবতার সেবা দিতে। মনোবিজ্ঞান পড়েছিলেন ভালভাবে বোঝাপড়া করতে। মনকে শক্ত করতে। বাংলাদেশের চরম সন্ধিক্ষণে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতাকামী কয়েক কোটি মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কাইয়ূম ভাইও প্রগতিশীল চেতনায় শাণিত হয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিদীপ্ত তৎপরতা অব্যাহত রাখেন।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত সকল শহীদের স্মৃতি, কর্ম সংরক্ষণ করার এবং তাদের প্রয়াণ দিবসে প্রশাসনিকভাবে স্মরণের। এ ব্যাপারে আমরা দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়ার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবী মীর আব্দুল কাইয়ুমের জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘মরণজয়ী শহীদ মীর কাইয়ুম’ প্রদর্শন করা হয়।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন শিক্ষক শহীদ বুদ্ধিজীবী মীর আব্দুল কাইয়ুমকে ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে পাকবাহিনী শহরের ঘোড়ামারায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ৩০ ডিসেম্বর শহরের বাবলাবন বধ্যভূমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ