কাঠ মিস্ত্রীর কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করে এবারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে ১ম হওয়া পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী মোস্তাকিম আলীর পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) আরএমপি সদরদপ্তরে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় অদম্য, পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী মোস্তাকিম আলীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন পুলিশ কমিশনার। সেই সাথে শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন তিনি। মোস্তাকিম রাজশাহী জেলার তানোর থানার বাঁধাইড় মিশনপাড়া গ্রামের শামায়ুন আলীর ছেলে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছেন। সেই লক্ষ অর্জনে মেস্তাকিমের মতো তরুণ মেধাবীদের এগিয়ে আসতে হবে।’
বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘মেধাবীদের মেধা বিকাশে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃষ্ঠোপোষকতা করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।’ মেস্তাকিমকে শিক্ষা অর্জন করে দেশে থেকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানান। সেই সাথে মোস্তাকিমসহ যেকোন মেধাবীদের প্রয়োজনে আরএমপি পাশে থাকবে বলেও জনান।
মোস্তাকিম পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে সংবর্ধনা পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত ও উচ্ছ্বাসিত হয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার মহোদয় আমার মতো ছেলেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এনে সংবর্ধনা দিয়ে সম্মানিত করেছেন। এই সংবর্ধনা আমাকে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগাবে।
প্রসঙ্গত, বেকার জীবন ফেসবুক পেজে প্রথম প্রকাশিত ‘কাঠমিস্ত্রীর কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করে ভর্তি পরীক্ষায় ১ম মোস্তাকিম’ সংবাদটি আরএমপি’র পুলিশ কমিশনারের নজরে আসে। এরপর দৈনিক নয়া শতাব্দীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে মোস্তাকিমের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিতে অফিসার ইনচার্জ পবা থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
মোস্তাকিম তানোর মুন্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় হতে ২০১৭ সালে জিপিএ-৪ দশমিক ৫৫ নিয়ে মাধ্যমিক এবং ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ হতে ২০২০ সালে জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদিনা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আকাঙ্খা থেকে এইচএসসিতে পুনরায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। প্রস্তুতির জন্য ভর্তি পরীক্ষার ১৫ দিন আগে তার পিতার কাছ থেকে কাঠমিস্ত্রীর কাজ হতে অব্যাহত নেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ১ম বর্ষ ২০২০-২১ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ‘বি’ ইউনিটের গ্রুপ-৩ এ ৮০ দশমিক ৩০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ