ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের প্রথম বর্ষের দুই আবাসিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, রাতে অশ্লীল গানের তালে তাদের নাচতে বাধ্য করেছেন একই হলের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন— জুলি মারমা, নাসরিন জাহান খুশি, জান্নাত নিপু, পূজা দাস ও রিনাকী চাকমা।
গত মঙ্গলবার রাতে রোকেয়া হলের অপরাজিতা বিল্ডিংয়ের ৪ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে এই র্যাগিং।
বুধবার ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রক্টর।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওইদিন রাত ১টা পর্যন্ত তাদের ওপর নানাভাবে অভিযুক্তরা নির্যাতন করেন। ধমক দেন, গালাগালি করেন এবং অশ্লীল গানে নাচতে বাধ্য করেন। না নাচলে খারাপ কিছু করার হুমকি দেন। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে একজন বলছিলেন ‘র্যাগ দে র্যাগ দে, চিল হবে চিল’।
প্রশাসনিকভাবে হলে ওঠেছি বলে প্রতিবাদ জানালে তারা ভুক্তভোগীদের বলেন, প্রশাসন আবার কিসের? আমরা দেই বলে তোরা এখানে থাকতে পারিস, না হয় পারতি না। এছাড়া র্যাগ শেষে অভিযুক্তরা বলেন, প্রভোস্ট ম্যামকে অভিযোগ করবি? ম্যামকে বলে কোনো লাভ নাই। আমাদের কিছুই হবে না।
ভুক্তভোগীদের মধ্য একজন মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, গত ২৫ অক্টোবর আমার বাবা মারা যায়, আমার মা নেই। এই মানসিক চাপগুলো আমি এখনো সামলে উঠতে পারিনি। তারমধ্যে এই নির্যাতন ভাবতেই পারিনি। আমি এই মুহূর্তে তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তিন নম্বর রুমে থাকি আর তারা চার নম্বর রুমে থাকে। আমরা প্রায়ই ওদের রুমে যাই, নাচানাচি করি। তারই অংশ হিসেবে কালকে গিয়েছিলাম। তাদের নাচতে বললে তারা নাচতে পারে না বলে জানায়। এরপর আমরা তাদের দুইজনের হাত টেনে একসঙ্গে নাচি, এর বেশি কিছু নয়।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। যেহেতু এটি হলের বিষয়, তাই প্রভোস্টকে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের কথা শুনতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ