রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে স্থানীয় এক যুবক। বুধবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একাডেমিক ভবনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, মতিহার ও চন্দ্রিমা থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মশিউর আলম মেহেদী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে অভিযুক্তের শিক্ষার্থীর নাম সুলতান মুহাম্মদ আন নুর। তিনি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তার বাসা রাজশাহীর লক্ষ্মীপুরে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ড্রইং ক্লাস করছিলাম। হঠাৎ দেখি অপরিচিত একটি ছেলে আমাদের সিনিয়র ভাইকে মারধর করছে। পরে আমরা দ্রুত এসে মারামারি থামাই। আর অপরিচিত ছেলেটিকে চারুকলার শিক্ষকদের কাছে সোপর্দ করি।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর সাথে একই বিভাগের এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে। অভিযুক্ত আল নূরও ওই মেয়েকে পছন্দ করে। তা সহ্য করতে না পেরে সে ভুক্তভোগীকে মারধর শুরু করে। পরে চারুকলার শিক্ষার্থীরা বিষয়টি দেখতে পায়। তারা এসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। আর অভিযুক্তকে অনুষদের গেট বন্ধ করে মারধর করে শিক্ষকদের কাছে সোপর্দ করে।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মেহেদী বলেন, ‘আমি ব্যবহারিক ক্লাস শেষ করে আমার বান্ধবীসহ শ্রেণীকক্ষে বসেছিলাম। এসময় অভিযুক্ত ছেলেটি আমাকে রুমের বাইরে ডাকে। বাইরে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় ও রক্তাক্ত করে দেয়। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি চারুকলার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।’
জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুর বলেন, ‘মেহেদী নামের ছেলেটির সঙ্গে বসে থাকা মেয়েটি আমার পূর্ব পরিচিত। তার সঙ্গে বসে থাকতে দেখে আমি তাকে মারধর করেছি।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মেহেদীর সঙ্গে বসে থাকা মেয়েটি বলেন, ‘মেহেদী আমার ক্লাসমেট। তার সঙ্গে আমি বসে থাকতেই পারি। আমি অভিযুক্ত নুর নামের ওই ছেলেটিকে চিনি না। সে আমার অপরিচিত।’
পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর লিয়াকত আলী তার প্রক্টরিয়াল বডি নিয়ে আসেন। এছাড়া চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরান হোসেনও তার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আসেন। পরে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে অভিযুক্ত সুলতান মুহাম্মদ আন নুরকে আটক করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, ‘ক্লাস চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে এক রাবি শিক্ষার্থীকে বহিরাগত একজন ছেলে মারধর করেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ছেলেটিকে আমরা চন্দ্রিমা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। আশা করি পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
এবিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরান হোসেন বলেন, ‘আমরা এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করলে, আমরা শীঘ্রই নুরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ