রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের ২৪ টাকার সাধারণ খাবারে প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে পেঁপে ও মাছের তরকারি দেওয়া হয়। পুষ্টিবিদরা বলছে, ক্যাফেটেরিয়াতে সরবরাহকৃত খাবারে অনেক উপাদানই নেই, যা একজন মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা একান্ত আবশ্যক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন নিয়ে আসা। তবে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক বলছে অর্থ সংকটের কারণে এমনটি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবারে তরকারি কিনলে ভাত ও ডালের দাম নেওয়া হয় না। সেই হিসেবে সাধারণ খাবার ২৪ টাকা নেওয়া হয়। যেখানে প্রতিদিন পেঁপের তরকারির সঙ্গে মাছ দেওয়া হচ্ছে। আলাদাভাবে রুই মাছ ৩০ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ৫০ টাকা, সোনালী মুরগী ৭০ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়। এছাড়াও কেউ যদি সবজি নিতে চায় তাহলে ৫ টাকা দিয়ে পেঁপের ভাজি বা ঘন ডাল নিতে পারে। এছাড়াও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর এখন পর্যন্ত রাতের খাবার চালু করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবারে প্রতিদিন একই মেন্যু ফলো করা হয়। সাধারণ খাবারে কখনো মাছ ছাড়া অন্য কিছু দেওয়া হয় না। এখন একবেলা খাবারের জন্য ৭০ টাকা খরচ করে মুরগীর মাংস খাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই প্রতিদিন খাবারের একই আইটেম ব্যবহার না করে পরিবর্তন আনলে ভালো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রিপণ চন্দ্র রায় বলেন, আমার হল অনেক দুরে। তাই ক্লাসের ফাকে দুপুরের খাবার অধিকাংশ সময় ক্যাফেটেরিয়াতে খেতে হয়। কিন্তু ক্যাফেটেরিয়ায় প্রতিদিন শুধু একই খাবার দেয়। কোনো সবজি পাওয়া যায় না।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, একটি মানুষকে শরীর সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। খাবারের যে ছয়টি উপাদান, ভিটামিন, খনিজ লবণ সঠিক অনুপাতে থাকতে হবে। এগুলো না থাকলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু এখন খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেশি। তাই প্রতিদিনের খাবারে ডাল, বিভিন্ন ধরণের সবজি একসাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক এ কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার ফান্ড এখন প্রায় শূন্য। তাই ২৪ টাকার সাধারণ মিল অনেকটা পকেটের টাকা দিয়ে খাওয়াতে হচ্ছে। আর এখন বাজারে সবকিছুর যে দাম তাতে ভর্তুকি দিয়েও কাজ হয় না। তাই এখন পর্যন্ত রাতের খাবার চালু করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এক লাখ টাকার একটা ফান্ড চাওয়া হয়েছে। ফান্ডের অনুমোদন হয়ে গেছে। কিন্তু বিভিন্ন নিয়মতান্ত্রিক জটিলতায় ফান্ড এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি। এটি হাতে পেলে খাবারের মানের পরিবর্তন আনা যাবে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ