ইউজিসি স্বর্ণপদক ২০১৮ এর জন্যে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান এবং মেরিন ফিশারিজ সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মো. সাদিকুল ইসলাম। উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে মৌলিক গবেষণা ও প্রকাশনায় অনবদ্য অবদানের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তাদের এ সম্মাননার জন্যে মনোনীত করেছেন। রোববার (৭ নভেম্বর) বিকেলে তাদের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালে বন, কৃষি ও পরিবেশ এবং জীববিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে ইউজিসি স্বর্ণপদকের জন্যে আবেদন করেন যথাক্রমে ড. শাহজাহান এবং ড. সাদিকুল। বাছাই প্রক্রিয়া শেষে আজ (৭ নভেম্বর) ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট এন্ড পাবলিকেশনের পরিচালক মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়।
ড. মো. শাহজাহান ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার মো. ইউনুছ আলী মন্ডল এবং মাতা মোছা. লতিফা খাতুন। তিনি ১৯৯০ সালে এসএসসি ও ১৯৯২ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএসসি ফিশারিজ (অনার্স) ও এমএস ইন ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. শাহজাহান ২০০১ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ফিশারিজ কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন এবং ২০০৪ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন। বর্তমানে অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। তিনি ২০১০ সালে জাপানের কিউসু বিশ্ববিদ্যালয় হতে মনবুশো বৃত্তির মাধ্যমে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি জাপান সরকারের JSPS অর্থায়নে নিগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টডক্টরাল গবেষণা করেছেন। আন্তর্জাতিক জার্নালে তার অনেকগুলো গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। তার গবেষনার স্বীকৃতি স্বরূপ ইউজিসি পদক -২০১৩, BAS-স্বর্ণপদক-২০১৫ ইত্যাদি পদকে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে তার অধীনে পিএইচডি পর্যায়ে ৪ জন ও MS পর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষার্থী গবেষণা কার্য পরিচালনা করছেন।
অন্যদিকে, ড. মো. সাদিকুল ইসলাম ১৯৭৩ সালে গাইবান্ধা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. নুরুল হোসেন সরকার এবং মাতা শাহরে বানু। তিনি ১৯৮৭ সালে এসএসসি ও ১৯৮৯ সালে ১ম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএসসি ফিশারিজ (অনার্স) ও এমএস ইন ফিশারিজ বায়োলজী এন্ড জেনেটিক্সে ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে বাকৃবিতে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০০৬ সালে তিনি জাপানের কেইও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং ২০০৮-১০ সালে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি ইউজিসি বৃত্তি বিএসসি ফিশারিজ-১৯৯২ এবং জিন্নাই ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট স্কোলারশীপ অর্জন করেন। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নির্বাচনী কমিটি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন ড. সাদিকুল। বর্তমানে তার অধীনে পিএইচডি পর্যায়ে ৮ জন ও MS পর্যায়ে ৭ জন শিক্ষার্থী গবেষণা কার্য পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে ড. শাহজাহান বলেন, ‘গবেষণা করা আমার নেশা। আমার ভালো লাগা থেকেই আমি গবেষণা করে থাকি। এর আগেও আমি গবেষণার জন্যে সম্মাননা পেয়েছি। গবেষণার বিষয়বস্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বেশ সুনাম অর্জন করেছে। এ ধারা অব্যহত থাকবে।’
ড. সাদিকুল বলেন, ‘সত্যিই এটি আনন্দের বিষয়। আমি আমার দ্বায়িত্ববোধ থেকেই গবেষণা করে থাকি। একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর পাশাপাশি গবেষণা করা আমার দ্বায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক গবেষণায় আগ্রহ বৃদ্ধি করলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো অবস্থান অর্জন করবে।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ