বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত পায়নি প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল সুবিধা। ফলে গবেষণা, শিক্ষাবৃত্তি ও ই-লার্নিং প্লাটফর্মে নানা ধরনের জটিলতা ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি অনলাইনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল সুবিধা দেয়া হলেও এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
স্বনামধন্য জার্নাল থেকে অনলাইনে গবেষণা প্রবন্ধ পড়া, শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করা, গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশনা, গবেষণা অনুদান প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয় প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল। কিন্তু এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমছে গবেষণায় তেমনি যাদের আগ্রহ আছে তাদেরও পড়তে হচ্ছে নানা জটিলতায়।
করোনা মহামারির সময়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল থাকার কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ব্যবহারিক ও একাডেমিক অনেক কোর্স করতে পারলেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা করতে পারছে না। এছাড়াও বিভিন্ন ই-লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপিং সফটওয়্যারের ফ্রি এক্সেস, জি স্যুট এডুকেশন বা আনলিমিটেড গুগল ড্রাইভ ব্যবহারসহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু রেজা মোঃ তৌফিকুর রহমান রিপন নয়া শতাব্দীকে জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অন্তত পনেরজন শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল জটিলতায় গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশে করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি আমলে নেওয়ার আহবান জানাই।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করতে গিয়েও বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আবীর। তিনি নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও সাধারণ ই-মেইলের চেয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়। শিক্ষার্থীরা এর যথাযথ ব্যবহার করে নিজের অবস্থানকে আরও জোরদার করতে পারেন। বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইলের ব্যবহারের বিকল্প নেই।’
অনলাইনে আর্টিকেল পড়তে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসরিন নয়া শতাব্দীকে জানান, একজন শিক্ষার্থীর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল হতে পারে আশীর্বাদস্বরূপ। যেসব ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে গুনতে হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ, সেখানে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল ব্যবহারের ফলে একজন শিক্ষার্থী একই ধরনের সেবা পেতে পারেন অনেক কম খরচে অথবা বিনা খরচে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের কম্পিউটার প্রোগ্রামার আল ইমরান নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল সুবিধা দেওয়ার কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। নির্দেশনা পেলে কাজ শুরু করবো।’ প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল সুবিধা শিক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য আইসিটি সেলের সক্ষমতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল সুবিধা দেওয়ার সক্ষমতা আইসিটি সেলের আছে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখন কথা বলতে পারবো না।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ