ঢাকা, শনিবার, ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১, ৩ রজব ১৪৪৬

নতুন বছরে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশনার সময়: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৮

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, জুলাই বিপ্লবের ফলে প্রায় ২০০০ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশের নতুন বছর নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশা-প্রত্যাশা, চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেছেন নয়া শতাব্দীর শেকৃবি প্রতিনিধি ফরহাদ আলম।

প্রথমেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত, নিহতদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতেছি। ২০২৪ সাল ইতিহাস হয়ে থাকবে বাঙালি জাতির হৃদয়ে। জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের বিনিময়ে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই নতুন বাংলাদেশ নিয়ে জাতির অনেক চাওয়া, প্রত্যাশা। দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তের কাছে আমাদের এই গণঅভ্যুত্থানকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। গণঅভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিলো বৈষম্যহীন, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা কারিকুলামে পরিবর্তন জরুরি। শিক্ষক, গবেষকদের নতুন বেতন কাঠামো ঠিক করা উচিত। তাহলে মেধাবী ছাত্ররা শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট হবেন এবং প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দক্ষ, সুশিক্ষিত জাতি বের হবে। এই সেক্টর উন্নত হলে পুরো দেশ এগিয়ে যাবে।

সর্বশেষ আমি নতুন বছরে আরেকটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে চাই, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে নীতি ও আদর্শগত দিক দিয়ে ভিন্ন মত থাকতে পারে কিন্তু দেশের স্বার্থে সকলকে এক হওয়া উচিত। এক রাজনৈতিক দল ভারত ঘেষা, আরেকদল যুক্তরাষ্ট্র বা চীন ঘেষা এমন যেন না হয়। আমরা অন্য কারও গোলামি করতে চাই না। ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের পালাবদল ঘটবে কিন্তু রাষ্ট্র নীতির যেন পরিবর্তন না ঘটে।

আল রাকিব

শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক,

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

নতুন বছর, নতুন সূর্য। দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও এসেছে পরিবর্তন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন প্রশাসনের কাছে থাকবে আকাশচুম্বি আশা। গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। গবেষণার ক্ষেত্রে ভর্তুকি বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে সেরা গবেষকদের স্বীকৃতি প্রদান, শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা প্রয়োজন। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে টেকনোলজির দিকে। তবুও আমরা পড়ে আছি অনেক পেছনে।

প্রিসিশান এগ্রিকালচার, উদ্ভিদের রোগ বা সমস্যা ছবির মাধ্যমে নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং কম্পিউটার সায়েন্স এর মত বিষয়গুলোকে কৃষির সাথে সংযুক্ত করার। যদি সরাসরি সম্ভব না ও হয়, তবুও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি করেও কৃষির এ সকল ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। দেশকে নতুনভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে কৃষিতে অবদান রাখতে আমার ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে এক অনন্য উচ্চতায় দেখতে চাই।

শাহেদ মাহমুদ

সহ-সভাপতি

শেকৃবি ডিবেটিং সোসাইটি।

নতুন বছর মানেই নতুন স্বপ্ন, নতুন ছন্দ। নতুন বছর এলে আমরা অপূরণীয় অনেক স্বপ্ন দেখি। পুরোনো বছরের স্মৃতি কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। দেশে ফিরে আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তা। শিক্ষার্থী হিসেবে নতুন বছরে চাই শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস। জঙ্গী, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক সর্বোপরি অস্থিতিশীলতা মুক্ত হবে ক্যাম্পাস এই প্রত্যাশা থাকবে। সম্প্রীতি ও সমঝোতার সংস্কৃতি রচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রসর হবে। জীবনের নিরাপত্তা, সহনীয় দ্রব্যমূল্য এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও এগিয়ে নিতে সবাই মিলে কাজ শুরু হোক- এটাই নববর্ষের প্রত্যাশা।

মো. সিফাত হোসেন

সভাপতি

শেকৃবি সাহিত্য সংসদ।

জুলাই অভুথানের মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, ২০২৫ সালে তার সুন্দর, সফল প্রতিফলন আমরা দেখতে পাবো ইনশাআল্লাহ। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরে নতুন উদ্যমে শুরু হোক সবার পথচলা। শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণে সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করবো। একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করার আহ্বান। আলোকিত মানুষ সংগঠনের ধারাবাহিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আগামী বছর নতুন স্কুলঘরে বাচ্চাদের ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের এক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা আশা রাখবো।

মো. জুলফিকার আলী

সাধারণ সম্পাদক

শেকৃবি আলোকিত মানুষ।

নতুন বছরে নতুনত্ব - এ তো সদা কাম্য। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের ক্যাম্পাসের সার্বিক অগ্রগতি ও সাফল্য সবসময়ই প্রত্যাশিত। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবান্ধব একাডেমিক উৎকর্ষতা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং এই অগ্রযাত্রা বহমান থাকুক সব সময়। গবেষণা ও উদ্ভাবনে নিজেদের নিয়োজিত রেখে দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখতে আমরা সদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর দরুণ 'বাণিজ্য মেলার মাঠ' হোক নতুন বছরে নতুন সংযোজন। লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস, কোটা পদ্ধতির সংস্কার, অবকাঠামগত উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। সর্বোপরি, উন্নত ও সমৃদ্ধ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক এটাই চাওয়া।

মারিয়াম জামিলা মারিয়া

শিক্ষার্থী এবং বিতর্কিত

শেকৃবি ডিবেটিং সোসাইটি।

একজন আদর্শ ও যোগ্য মানুষ হতে ক্লাবিং অনেক বড় ভূমিকা রাখে বলে মনে করি। যেমন রোভারিং আমাকে শিখিয়েছে ইন্স্যান্ট কোন সিচুয়েশন আসলে কিভাবে ট্যাকেল দেয়া যায়। আলোকিত মানুষের কার্যক্রম শিখিয়েছে বিনয়। নতুন বছর হোক নতুন উদ্যমের। লক্ষ্য হোক স্থির। ছোট বড় যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শক্তি ও সাহস থাকুক মনে। এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার অন্যতম মাধ্যম হলো ক্লাবিং। আমাদের আঙিনায় সকলের আমন্ত্রণ রইল। নতুন বছর সবার জন্য সুন্দর হোক এই কামনা।

তাহেরা আলীম অথী

সদস্য

এগ্রিরোভার্স ও আলোকিত মানুষ।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ