সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রাণির অধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকারের উদ্যোগে ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় তিন দিনব্যাপী 'জলবায়ু ও যুব নেতৃত্ব' বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সাইন্সেস অনুষদের চতুর্থ তলায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়।
যেখানে উৎতি বয়সী যুবাদের মধ্যে জলবায়ু বিষয়ক সচেতনতা তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ, প্রভাব সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে প্রোগ্রামের সূচনা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে জলবায়ু ও জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
পরেরদিন সকাল ১০টায় যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও জলবায়ু সম্পর্কিত প্রায় ৬০টি সমসম্ভাব্য গবেষণা প্রকল্পের মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষে প্রাধিকারের সদস্যগণ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বানর ও পাখি সংরক্ষণের উপর দুটি সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা বাস্তবায়নে এফআইভিডিবি ও ব্রিটিশ কাউন্সিল তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এবিষয়ে বিল্ডিং এজেন্সি অব ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট এ্যাকশন প্রকল্পের ক্যাম্পেইন লিড আদেল মাহমুদ জাদ্দারী বলেন, বিল্ডিং এজেন্সি অব ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট এ্যাকশন মূলত ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটা প্রোগ্রাম যা সিলেট অঞ্চলে বাস্তবায়ন করছে ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (FIVDB)৷ এ প্রকল্পের আওতায় সিলেটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়৷ এই প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হচ্ছে ১৮-২৯ বছর বয়সী যুবাদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা৷ পাশাপাশি যুবাদের সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কিভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের যুবারা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে তা নিশ্চিত করা৷
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হয়তো বন্ধ করা সম্ভব না৷ তবে তার ক্ষতি আমরা চাইলেই অনেকখানি কমাতে পারি৷ যুবারাই একটা দেশের অন্যতম চালিকা শক্তি৷ বিশ্বাস করি বাংলাদেশের যুবারা যদি সামষ্টিকভাবে এদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার পাশাপাশি, দেশ গঠনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে, তবে আমরা একটা সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মান করতে পারবো৷
অন্যদিকে, প্রাধিকারের রেসকিউ প্রধান ইসহাক হাসিব বলেন, প্রাধিকার, যা প্রাণির অধিকার নিয়ে কাজ করে, মানবজাতি এবং প্রাণিজগৎ একজন আরেকজনের সাথে সম্পর্কিত একটি আরেকটির পরিপূরক। মানবজাতি যদি ভালো থাকতে চায় তাহলে অবশ্যই প্রাণি জগতের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমানে যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তা মূলত মানব সৃষ্ট কারণে হয়ে থাকে। এই মানব সৃষ্ট কারণে আজকে প্রাণি জগত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই প্রাণি জগতের অধিকার এবং তাদের ভালো এবং নিরাপদ থাকার জন্য প্রাধিকার কাজ করে থাকে। জীববৈচিত্র্য যদি রক্ষা করা না যায় তাহলে সেইটা আমাদের পরিবেশের এবং জলবায়ুর ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে। এই জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য প্রাধিকার শুরু থেকেই কাজ করে আসছে এবং সামনেও কাজ করে যাবে।
প্রসঙ্গত, প্রাধিকার ২০১২ সালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। সিকৃবি ক্যাম্পাস ও সিলেটে প্রাণির অধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি বিনামূল্যে টিকাদান, কৃমিনাশক খাওয়ানো, প্রাণি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম, বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ