রাতভর র্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় হল প্রশাসনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে ১ বছর (২ সেমিস্টার) এর জন্য সাময়িক বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ৷
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের জুনায়েদ হোসাইন, তানভির ইসলাম সিয়াম ও প্রিতম কারণ, আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদের শাওন, সুপেল চাকমা, গোলাম রাব্বি, কৃষি অনুষদের জিহাদ হোসাইন। তারা ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী।
আইসিইউতে ভর্তি শিক্ষার্থী হলেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের হাসিবুর রহমান হাসিব।
রোববার (২৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ঘটনা তদন্তের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের দায়ে আজই ১ বছর (২ সেমিস্টার) এর জন্য সাময়িক বহিষ্কার এবং হল বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সাথে সভা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তাদের সুপারিশক্রমে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদেরকে একাডেমিকসহ অধিকতর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪সেশন) সকল শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেওয়া হয়। র্যাগিং চলাকালীন হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অমানবিক নির্যাতনের কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত ১২টার দিকে ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে এসে সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদেরকে কান ধরে উঠা বসা করতে বাধ্য করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলে, সিগারেটের ধোয়ায় অসস্থিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
পরিস্থিতির খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মো. আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গণরুমে ঢুকে র্যাগিং দেয়ার সাথে যুক্ত দুইজনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন এবং ক্যান্টিনে গিয়ে চারজনকে র্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ